নাটোরে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন
নাটোরের নলডাঙ্গায় ১৩ বছরের কিশোরী মরিয়ম খাতুন লাবনীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে বাবু শেখ ওরফে কালু (৪৯) এবং রইস উদ্দিন সরদার (৬২) নামে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলায় অভিযুক্ত সোহাগ, রাকিব হোসেন, আলামিন, জিয়া ও জামাল নামে পাঁচজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত বাবু শেখ নওগাঁ জেলার রাণী নগর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের মৃত জাহের আলীর ছেলে এবং রইচ উদ্দিন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত বাবু শেখের বিরুদ্ধে নাটোর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৯ নারীকে হত্যার অভিযোগ আছে। তারমধ্যে আটজনকে ধর্ষণের অভিযোগও আছে।
মামলার বরাত দিয়ে আনিসুর রহমান বলেন, নলডাঙ্গার খাজুরা গ্রামে ২০১৪ সালের ৬ মে রাতে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিল লাবনী। সকালে ঘুম থেকে উঠে তার মা দেখতে পান লাবনীর ঘরের দরজা খোলা। পরে ঘরের ভিতরে গিয়ে তিনি দেখেন, তার মেয়ের মুখের ওপর বালিশ চাপা দেওয়া ও শরীরের জামাকাপড় এলোমেলো পড়ে আছে। এ সময় তার চিৎকারে শিশুটির বাবাসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা লাবনীকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে ঘটনাটি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহত লাবনীর বাবা আব্দুর রশীদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে নলডাঙ্গা থানায় একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। তিন মাস পরে ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নলডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আবু তাহের ও পরিদর্শক মো. ওয়াজেদ আলী খান অভিযোগপত্র জমা দেন। দীর্ঘ ১০ বছর মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক এই রায় দেন।
রায়ে আনোয়ার হোসেন বাবু ও রইচ উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে এই মামলায় কোনোভাবে জড়িত না থাকায় পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালতের বিচারক।
গোলাম রাব্বানী/এফআরএস