পান্নার মরদেহ মেঘালয় পুলিশের কাছে, দেশে ফিরিয়ে আনতে আবেদন
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্নার মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) ভোররাতে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে যাওয়ার পর পাহাড় থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা পুলিশের কাছে আছে বলে জানিয়েছে পরিবার। ইসহাক আলী খান পান্নার বড় ভাই জাফর আলী খান ভারত থেকে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
জাফর আলী খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মরদেহ দেশে আনার জন্য আবেদন করেছি। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনারের কার্যালয়ে মরদেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে।
ইসহাক আলী খান পান্নার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তার বড় ভাইয়ের শ্যালক জসিম উদ্দিন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, যারা ঘটনার সময় ইসহাক আলী খান পান্নার সঙ্গে ছিলেন তারা আমাদের জানিয়েছেন, গত সোমবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা পুলিশ ইসহাক আলী খান পান্নার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে সংগ্রহ করে রেখেছে। মরদেহ এখন সেখানকার পুলিশের হেফাজতেই আছে। এ বিষয়ে ইসহাক আলী খানের সঙ্গে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর থেকেই রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। পরে তিনি সিলেট থেকে সিমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার ভোর ৪টার দিকে তিনিসহ কয়েকজন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল এলাকা দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি এলাকায় প্রবেশ করেন। পরে শনিবার ভোররাতে মেঘালয়ের ডাউকি এলাকায় পাহাড় পার হওয়ার সময় পরে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় মারা যান ইসহাক আলী খান পান্না। সোমবার মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। মরদেহ এখন সেখানকার পুলিশের হেফাজতেই আছে।
ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটি ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
ইসহাক আলী খান পান্না পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান পান্না। পরে ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচনের কারণে সরে যেতে হয় তাকে। পেশাগত জীবনে বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারমান ছিলেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা।
শাফিউল মিল্লাত/এএমকে