সিরাজগঞ্জে কলেজছাত্র হত্যায় মামলায় সাবেক এমপিসহ আসামি সাড়ে ৭শ
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা চলাকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে গুলিতে কলেজছাত্র শিহাব হোসেন (১৯) নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এনায়েতপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. সোলায়মান শিহাবের পরিবারের অনুমতিক্রমে বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মমিন মন্ডল, তার ভাই আব্দুল আলীম মন্ডল, বেলকুচি পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজাসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় আরও ৫০০-৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এনায়েতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসিবুল্লাহ ও মামলার বাদী মো. সোলায়মান মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শিহাব হোসেন সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। শিহাব সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মাধবপুর গ্রামের শফি মিয়ার ছেলে।
মামলার আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন, এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বিএসসি, চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ, বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম, বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রকি, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাজ উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক বাবুল আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান চুন্নু তালুকদারসহ অন্যান্যরা।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানার খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি এনায়েতপুর থানার আল হেরা মার্কেটের সামনে পৌঁছালে সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলসহ আসামিরা হাতে পিস্তল, ককটেল, লোহার রড, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জয় বাংলার স্লোগান দিয়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা চালায় ও নির্বিঘ্নে গুলি চালায়। এতে বেশ কিছু ছাত্র আহত হয়। এসময় গুলিতে আহত হয় কলেজছাত্র শিহাব হোসেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে এনায়েতপুর খাঁজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত কলেজ ছাত্র শিহাব হোসেনের পরিবারের অনুমতিক্রমে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলেও মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী মো. সোলায়মান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন নসাৎ করতেই সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় প্রায় শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হন। গুলিতে নিহত হন শিহাব। তিনি বলেন, শিহাবের পরিবারের অনুমতি ক্রমে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি মামলাটি দায়ের করেছি।
এনায়েতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসিবুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কলেজ ছাত্র শিহাব হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল রাতে সোলায়মান নামে এক ব্যক্তি মামলার আবেদন দিলে সেটি এজাহার হিসেবে নেওয়া হয়।
শুভ কুমার ঘোষ/আরকে