‘জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা আওয়ামী লীগের চরম সীমালঙ্ঘন’
বরগুনা জেলা শাখার আমির মো. মহিবুল্লাহ হারুন বলেছেন, ১ আগস্ট জামায়াত ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ চরম সীমালঙ্ঘন করেছে। আর এ কারণেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার তোপে দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্ষমতা ছেড়ে করুণ অবস্থায় বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।
রোববার (১৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে বরগুনা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জামায়াত ইসলামীর জেলা শাখা ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার জেলা আমির মো. মহিবুল্লাহ হারুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় নেতাকর্মীরা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। তাদের দীর্ঘ শাসনামলে সবথেকে বেশি কারাভোগসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন জামায়াত ইসলামের নেতাকর্মীরা। এখন আমরা মুক্ত হয়েছি। তবে আমরা কেউ প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আমরা সব ভুলে নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার কাজ করতে চাই।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে যে অরাজকতা সৃষ্টি করা হয়েছে বা এখনো চেষ্টা চলছে এর মধ্যে যদি আমাদের কেউ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে ছবিসহ সংবাদ পরিবেশন করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শ সংগঠন। দীর্ঘবছর পর আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই আমরা সব ভুলে সকলে মিলেমিশে দেশের কল্যাণে কাজ করবো।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় আমির ড. শফিকুর রহমানের নির্দেশনায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি। হিন্দু ও অমুসলিম ভাইদের নির্যাতন, ধর্মীয় উপাসনালয়, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট যাতে না হয় সেজন্য আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী হিন্দু ভাইদের বাড়িঘর হতে শুরু করে বিভিন্ন উপাসনালয় আমরা প্রতিনিয়ত পাহারা দিয়ে যাচ্ছি।
জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার আমির মো. মহিবুল্লাহ হারুন বলেন, আওয়ামী লীগের শাসন আমলে বছরের ৩৬৫ দিনই আমরা ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে কাটিয়েছি। এক পথে হাটতেও পারিনি পুলিশের ভয়ে কখন ধরে নিয়ে যায় এই ভয়ে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা রেখে নতুন করে দেশ গড়তে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজে কোনও গোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু মনে করি না। আমাদের সকলেরই বড় পরিচয় আমরা বাংলাদেশি নাগরিক। হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই আমরা এক সঙ্গেই থাকতে চাই। যে যার যার মতো ধর্ম পালন করবে তাতে কারো কোনও বাধা নেই। যদি কোনও ধর্মীয় কাজে কেউ বাধা প্রদান করে তাহলে আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করবো যাতে তাদের (বাধাদানকারী) শক্ত হাতে দমন করে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বরগুনা জেলা শুরা ও কর্মপরিকল্পনা সদস্য মো. আনোয়ার হোসাইন, সদর উপজেলা আমির মাওলানা নুরুল আমিন, সহ-সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান আল মামুন, পৌর আমির আব্দুল জলিল, ইসলামী ছাত্রশিবির বরগুনা জেলা কমিটির সভাপতি সুমন আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি মো. আব্দুল কুদ্দুস, জেলা যুব বিষয়ক সম্পাদক এম ইলিয়াস আহমেদ, জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মো. জহুরুল হকসহ অনেকে।
মো. আব্দুল আলীম/পিএইচ