ছাত্রলীগ নেতা সজিবের নেতৃত্বে জেল থেকে পালালেন ৯৯ বন্দি
কারারক্ষীদের ওপর হামলা করে কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে ৯৯ জন বন্দি পালিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে আলোচিত মিলন হত্যা মামলার মূলহোতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজীব শেখসহ ওই মামলার কয়েকজন আসামি রয়েছেন।
সজিব আসামিদের নিয়ে বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেন কারারক্ষীরা। এমন পরিস্থিতিতে কারাগারে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুন
জেল সুপার আব্দুল বারেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে পরিকল্পিতভাবে পালিয়েছে। দাগি আসামি সজিব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা প্রথমে ভেতরের একটি গেট ভেঙে ফেলেন। এরপর মূল গেটে দায়িত্বরত কারারক্ষীদের ওপর হামলা করে এবং বেধড়ক মারধর করে পালিয়ে যায়। এতে ১০ থেকে ১৫ জন কারারক্ষী হালকা আহত হয়েছেন। কয়েদি সজিবের নেতৃত্বে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৯৯ জন পালিয়ে গেছে। পরে আরও অনেক কয়েদি বেরিয়ে যাওয়ার যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পলাতকদের মধ্যে থেকে ৭ জন ফিরে এসেছে। আরও অনেকে ফিরে আসবে।
কুষ্টিয়া জেলা স্কুল ক্যাম্পের কমান্ডার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুল আলম শিকদার বলেন, কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়ে গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কয়েকটি টিম কারাগারে যাই। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কারাগারে কর্মরত সবাইকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
কারাগার থেকে পলাতক সজীব শেখ (২৪) কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ সভাপতি। তিনি কুষ্টিয়া শহরের কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান ছিল। শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার কারণে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় সজীবকে। এরপর তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সজীব মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, কিশোর গ্যাং গ্রুপের সন্ত্রাসীদের দাবি করা চাঁদা না দেওয়ার কারণে মিলন হোসেনকে হত্যার পর মরদেহ পদ্মার চরে পুঁতে ফেলা হয়। কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় পদ্মা নদীর চরের চার স্থান থেকে তার মরদেহের ১০ টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মিলন হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহির মাদি এলাকার মাওলা বক্সের ছেলে। তিনি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন।
রাজু আহমেদ/এসএসএইচ