আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন জামায়াতের আমির
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে রংপুরের পীরগঞ্জে জাফরপাড়ার বামনপুরে নিজ বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
এর আগে তিনি আবু সাঈদের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান। এছাড়াও নিহতের পরিবারকে নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেন। একই সঙ্গে আবু সাঈদের পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনা হবে বলেও জানান জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
এর আগে সকালে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে রংপুরের পীরগঞ্জে আসেন জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি জাফরপাড়া কামিল মাদরাসার মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নেমে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ছাত্র-জনতাসহ আমাদের সকলের অংশগ্রহণে অর্জিত এই বিজয়কে ম্লান করতে একটি মহল এখনো ষড়যন্ত্র করছে। তারাই এখন সহিংসতা নাশকতা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুরে গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ। নয় ভাই বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবচেয়ে ছোট। ভাই-বোনদের মধ্যে আবু সাঈদ ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখেনি। লেখাপড়া বেশি না করায় অন্যরা কৃষি কাজসহ দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মেধাবী আবু সাঈদ অষ্টম শ্রেণি, এসএসসি, এইচএসসিতে ভালো ফল অর্জন করে এবং বৃত্তি পায়।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার পরিবারের আশা ছিল, বিসিএস ক্যাডার হয়ে আবু সাঈদ পরিবারের হাল ধরবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে পুলিশ-ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। পরদিন ১৭ জুলাই তাকে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর