লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৮
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের আটজন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে চারজন আন্দোলনকারী ও চারজন আওয়ামী লীগের কর্মী বলে জানা গেছে। রোববার (৪ আগস্ট) রাত ১০টা পর্যন্ত এই আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে উভয়পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছে।
এদিকে আন্দোলনকারীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু ও তার বাবা সাবেক পৌর মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের বাসভবনে আগুন দিয়েছে। বাসার ছাদে অনেকেই আটকা রয়েছে বলে জানা গেছে। বিকেলে ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে গেলে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে পড়ে। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ফায়ারসার্ভিস আগুন নেভাতে যায়। তবে আন্দোলনকারীরা আগুন নেভাতে বাধা দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়াও জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে চারজনের মরদেহ শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসার সামনে পড়ে ছিল কয়েকঘণ্টা। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মরদেহগুলো উদ্ধার করতে ঘটনাস্থল যায়। নিহত এই চারজন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। এদের মধ্যে একজন সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও টুমচর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) হারুনুর রশিদ, অন্যজন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান টিপুর গাড়িচালক রাসেল। বাকী দুইজনের নামপরিচয় জানা যায়নি।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বাসভবনের ছাদের ওপর থেকে চেয়ারম্যান টিপু ও তার লোকজন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে কয়েকজন মারা গেছে। শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছে।
অন্যদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত তিনজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তারা মারা গেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আফনান পাটওয়ারী নামে আহত এক শিক্ষার্থীকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সোহেল রানা গণমাধ্যমকে বলেন, সংঘর্ষে আটজন নিহত হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসায় আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে।
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবন এলাকা ঘিরে রেখেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং বাসায় আটকা পড়াদের উদ্ধারে কাজ চলছে। আমরা সহিংসতা ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতেছি। সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এএমকে