‘মোর ভাইগো মারলি ক্যা’
বরিশালে কোনো সংঘাত ছাড়াই শেষ হয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রার্থনা ও গণমিছিল। শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজের পর সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মূল ফটক থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলসহকারে তারা নথুল্লাবাদ গোল চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে পুনরায় কলেজের মসজিদ গেটে কর্মসূচি শেষ করেন তারা। এ সময় তাদের হাতে ‘মোর ভাইগো মারলি ক্যা’ লেখা ফেস্টুন দেখা যায়।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী শোভন বলেন, আমরা সরকারের কাছে একটি ন্যায্য দাবি তুলেছিলাম। সরকার রাজনৈতিক দলের মতো শিক্ষার্থীদের ওপর ঢালাওভাবে গুলি করেছে। আমাদেরকে দুই শতাধিক লাশ উপহার দিয়েছে। কতজন পঙ্গু হয়েছেন তার হিসাবে নেই। এই আন্দোলন সরকার দীর্ঘায়িত করেছেন। আমাদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা তার কাছে আর কোনো বিচার চাই না। বিচার সৃষ্টিকর্তার কাছে দিয়েছি।
আরেক শিক্ষার্থী নাজমুন্নাহার বলেন, এখন আর ছাত্র আন্দোলন বলে লাভ নেই। এই আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এর আগে নথুল্লাবাদে পুলিশ বিনা কারণে আমাদের ওপর গুলি ছুড়েছিল। আজকে আমার মা এসেছেন সঙ্গে। তিনি চাইলে আমাকে নাও আসতে দিতে পারতেন। এজন্যই বলি, শুধু ছাত্র আন্দোলন বলবেন না, এটা এখন গণআন্দোলন। আমরা বিচারপতির বিচার করতে এসেছি। জনতার রায় তাকে মেনে নিতেই হবে।
শিক্ষার্থী পপি বলেন, আমাদের আর গুলির ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। আমরা মরতে শিখে গেছি। জয় না নিয়ে ঘরে ফিরবো না। ২০০ লাশ হয়েছে। এখন আমরা সকলেই লাশ হতে প্রস্তুত। সরকার প্রধানের কতজনের লাশ চাই আর? আমরা ৯ দফা আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না।
আন্দোলনকারীরা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়কের একাংশ ফাঁকা রেখে মিছিল ও সমাবেশ করেন। বেলা ২টায় কর্মসূচি শুরু করে বিকেল ৫টার দিকে শেষ করেন।
আন্দোলন চলাকালে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি উপস্থিত থাকলেও কর্মসূচিতে কোনো বাধা প্রদান করতে দেখা যায়নি।
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার জন্যই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএমকে