মুখে মুখে ‘হেডম’ দেখিয়ে লাভ নেই : শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমরা প্রস্তুত থাকব যাতে যেকোনো খবর পেয়ে অন্তত ঢাকা পর্যন্ত যেতে পারি। মুখে মুখে হেডম দেখাবেন না, যদি সত্যিকারের হেডমওয়ালা হয়ে থাকেন তাহলে প্রমাণ করেন। জাতির পিতার কন্যার বিরুদ্ধে সমস্ত শক্তি এক হয়েছে। সব কথা এখানে এভাবে বলা যাবে না। কিছু ক্ষয়ক্ষতি হবে, কিন্তু বিন্দু পরিমাণ টেনশন করবেন না। শেখ হাসিনাকে এক চুল সরানোর ক্ষমতা এদের বাবারও নেই। ক্ষমতায় শেখ হাসিনাই ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন ইনশাআল্লাহ৷
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের রাইফেলস ক্লাবে আওয়ামী লীগের এক কর্মীসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতকে আরও আগেই নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জামায়াত এবং শিবিরকে বাংলাদেশে ব্যান করা হবে। এটা আসলে অনেক আগেই করা উচিত ছিল। গতকাল আমাদের আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ওরা ওদের মরণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করবে।
শামীম ওসমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জের বিষয়ে অবগত আছেন এবং তিনি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য মেসেজ দিয়েছেন, এটা সরকারি কোনো মেসেজ না। কয়েকটা দিন আপনারা কেউ ফাঁকিবাজি করবেন না। এটা করলে নিজেই বাঁচবেন না। আমার সমাবেশ করার কথা নেত্রীকে বলেছি, তিনি বলেছেন এখন না। তুমি নেতাকর্মীদের বলে দাও যার যার এলাকায় ও অলিগলিতে তারা যাতে পাহারায় বসে। স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গি যাতে রাস্তায় না নামতে পারে। অনেক হাইব্রিড ঘরে বসে আছে।
তিনি বলেন, সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনেন আজকের রাত স্বাভাবিক না, আপনারা পাহারা বসান। সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড ওইসব এলাকায় যারা আছেন, আপনারা সবাই প্রস্তুত থাকবেন। মরার জন্য কিন্তু কেউ প্রস্তুত থাকবেন না। আমরা অলরেডি কিন্তু আক্রান্ত হয়েছি। আমরা কাউকে আঘাত করিনি, হামলা করিনি, আগুন দিইনি, কোনো বোনের গায়ে হাত দিইনি। আমরা অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছি। আর এটা শুধু জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কাজ না, ড. সাব থেকে শুরু করে সাদা-কালা অনেকে জড়িত হয়ে গেছে।
শামীম ওসমান বলেন, যারা আমার শীতল বাস পুড়িয়েছেন, শাহ নিজামের পার্ক পুড়িয়েছেন, আওয়ামী লীগ অফিস পুড়িয়েছেন, দোকানপাট লুট করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনাদের বাড়িঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য সব ঠিকানা আমাদের নেওয়া হয়ে গেছে। আমরা কিন্তু আঘাত করিনি, করার দরকারও নেই। জনগণ যদি ক্ষিপ্ত হয়ে আপনাদের বাড়ি ঘরে আঘাত করে আমরা কিন্তু জনগণের বিপক্ষে যেতে পারব না। নারায়ণগঞ্জে এখন আর কেউ রাস্তায় নামার সাহস দেখিয়েন না। বাইরের লোকদের শেল্টার দেওয়ার সাহস দেখিয়েন না। কারণ আজকের পরে কালকের দিনে কিন্তু আবার সূর্য উঠবে। আমাদের মারবেন? আমাদের নেক্সট প্রজন্ম কিন্তু আছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আপনারা সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। মহিলা আওয়ামী লীগ ওয়াচ করে খবর নেন কোথায় কী হচ্ছে। আমরা সবাই প্রস্তুত, আপনারা বলবেন কখন দাওয়াত খেতে আসতে হবে। এমন দাওয়াত খামু যাতে জীবনে আর দাওয়াত না দেয়। আমরা কাউকে কোনো ক্ষতি করতে চাই না, কিন্তু কেউ যদি আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর উপরে আঘাত করতে আসে, তাহলে যে হাত দিয়ে আঘাত করবে সেই হাত নিয়ে যেন ফিরে যেতে না পারে। মনে রাখবেন, সাধারণ ছাত্ররা আমাদের সন্তান। শেখ হাসিনা না থাকলে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের থেকেও বেশি খারাপ হবে।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, আজকে যে মেয়েরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছে, সেই মেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাবে, রাস্তায় বের হতে পারবে না। বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো চেষ্টা করা হবে, এই চেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবে হচ্ছে। নয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন না যে, বাংলার দরজা খোলা আছে, তোমরা নক করলে আমরা আশ্রয় দেব। নয়তো ড. সাব ফ্রান্সে বসে বলে না যে, আগাম নির্বাচনে দিতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু প্রমুখ।
শিপন সিকদার/এসকেডি