রপ্তানিতে ভাটা, স্থবির আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান পরিস্থিতিতে বিগত পাঁচ দিন ধরে স্থবির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। স্থলবন্দরটিতে ইন্টারনেট সেবা চালু না হওয়ায় বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়নি। শুধু তাই নয়, রপ্তানিতেও চলছে ভাটা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দরের বন্দরের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্দরের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু না হওয়ায় ম্যানুয়ালি কার্যক্রম চালাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম চলাতে গিয়ে যেমন বিপাকে কর্মকর্তা-কর্মচারী, তেমনি ব্যবসায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বন্দরটির ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলমান কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব নেমেছিল প্রায় অর্ধেকে। স্বাভাবিক সময়ে এই বন্দর দিয়ে ২ লাখ ডলার মূল্যের মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্য তেল, তুলা, ফার্নিচার ও খাদ্যসামগ্রী রপ্তানি হয় ভারতে। চলমান পরিস্থিতির অস্থিতিশীলতা ও কারফিউর কারণে ভারতে গেছে নামমাত্র পণ্য। ইন্টারনেট না থাকায় ২০ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ম্যানুয়ালি রপ্তানি হয় ৫৩ টন মাছ ও ৭০ টন সিমেন্ট। এতে রপ্তানি আয় এসেছে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা বলেন, আন্দোলনের কারণে বন্দরে রপ্তানি কমে গেছে অনেক। চলমান পরিস্থিতিতে চাহিদার দিক বিবেচনা করে শুধু মাছের গাড়ি যাচ্ছে ভারতে। এতে বন্দরের ব্যবসার অবস্থা একদমই স্থবির।
চলমান পরিস্থিতির কারণে বন্দরের সকল ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে বলে জানিয়েছেন আখাউড়া স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিবুল হাসান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, কারফিউসহ নানা জটিলতাকে ঘিরে দূরদূরান্ত থেকে পণ্য ও পণ্যবাহী যান বন্দরে পৌঁছাতে পারছে না। ইন্টারনেট ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু না হওয়ায় মালামাল খালাসেও চলছে ঝামেলা। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ইন্টারনেট সেবা দ্রুত স্বাভাবিক করা প্রয়োজন।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন আরও বলেন, গতকাল বুধবার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে শুধু মাছ রপ্তানি করা হয়েছে। এর আগে কিছু সিমেন্ট ভারতে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার মাছ ও স্টিল পাইপ রপ্তানি হয়েছে। আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে পূর্বের ন্যায় বন্দর আগের রূপে ফিরে আসবে।
প্রসঙ্গত, আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে সর্বপ্রথম ১৯৯৪ সালে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাণিজ্য বাড়ায় গুরুত্ব বিবেচনায় ২০১০ সালে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আখাউড়া স্থলবন্দর। তারপর থেকে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন হিমায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, ভোজ্য তেল, তুলা, ফার্নিচার ও খাদ্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। সেখান থেকে রপ্তানিকৃত পণ্য সরবরাহ হয় পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে।
মাজহারুল করিম অভি/এমজেইউ