পৌরসভার বর্জ্য ইউনিয়নে, দুর্গন্ধে নাজেহাল মানুষ
আবাসিক এলাকায় আবর্জনা ফেলায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাতক্ষীরা তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪০০ পরিবার। প্রতিনিয়ত মশা, মাছি ও নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করে বসবাস করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের।
অভিযোগে জানা যায়, ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের দুই লক্ষাধিক লোকসংখ্যার বর্জ্য নগরঘাটা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া ওই এলাকায় জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুল রহমান বাবুর জমি ভরাট করা হচ্ছে ময়লা দিয়ে। এতে এলাকাবাসীর নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, স্বাস্থ্যহীনতাসহ নানা রোগব্যাধি।
নগরঘাটা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মনিরুজ্জামান বলেন, ওই পাশের যে জমিটি রয়েছে সেটা পৌরসভার কেনা জমি। কিন্তু এখন যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে এটা সাতক্ষীরা প্যানেল চেয়ারম্যানের জমি। এটা ময়লা দিয়ে ভরাট করছে। উনাকে বারবার নিষেধ করার পরও উনি ময়লা ফেলছে। কিছুদিন পরপর ফেলে। এ কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। দিনরাত গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আব্দুল আহাদ বলেন, আপনারা তো দেখতে পাচ্ছেন এখানে কত বাড়ি। ময়লা ফেললেও এখানে কোনো মেডিসিন ব্যবহার করা হয় না। প্রথমে যখন ময়লাগুলো ফেলা হচ্ছিল তখন লোকজন বাধা দিলে পুলিশ এসে কথা দিয়ে যায় ব্লিচিং পাউডারসহ অন্যান্য মেডিসিন ব্যবহার করা হবে। তারপর এক দুদিন একটু দেয় এরপর আর দেওয়া হয়নি।
মারকাজুল ফিক আল ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা শরিফুল ইসলাম বলেন, এখানে হেফজ খানার বাচ্চারা পড়াশোনা করে। বৃষ্টি হলেই আমাদের আসা-যাওয়ার সমস্যা হয়। প্রচণ্ড দুর্গন্ধ আসে। অনেক সময় অনেক নোংরা জিনিসপত্র ফেলা হয়। বাইরে থেকে অনেক কুকুর আসে এখানে। এজন্য আমরা খুব বিপদে আছি। কুকুর আসে বলে আমরা ঘেরাও দিয়েছি। তবুও গন্ধে থাকা যাচ্ছে না। এই এলাকার মানুষ নামাজ পড়তে আসে ময়লার ওপর দিয়ে। এছাড়া আমাদের দাবি ময়লা যদি ফেলতেই হয় তাহলে সেটা পরিকল্পিতভাবে ফেলা হোক।
নগরঘাটা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান মুকুল বলেন, পৌরসভা জায়গা কিনে ওখানে ময়লা ফেলছে। জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তিনি জমি কিনে ময়লা দিয়ে ভরাট করছে। আমরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহ হয়নি। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থেকেই কাজটি করাচ্ছে। আমরা যখন প্রথমে বাধা দিয়েছিলাম তখন বলা হয়েছিল চারপাশ দিয়ে দেয়াল দেওয়া হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ঘরের ভেতর ময়লা ফেলবে।
নগরঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপু বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার জানা নেই।
জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুল রহমান বাবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে উনি কল না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে বিকল্প কোনো জায়গায় ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখব। পৌরসভাকে তাহলে সেখানে শিফট করতে বলব।
ইব্রাহিম খলিল/আরকে