পরকীয়ার জেরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে বেঁধে গণপিটুনি
ফরিদপুরের সালথায় পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন মো. সবুজ সরদার (৩৫) নামের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। পরে গ্রামবাসী ওই নেতাকে চেয়ারে বেঁধে গণধোলাই দেন। এ ঘটনার ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
শনিবার (৬ জুলাই) উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার সবুজ মাঝারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে সবুজকে। তার হাত বাঁধা। একজন মুরুব্বি তার শার্টের গলার ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ সময় সবুজকে উপস্থিত সকলের কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে শোনা যায়।
অপরদিকে ১ মিনিট ২ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে এক নারীর সঙ্গে নাচছেন সবুজ। এ সময় তার হাতে মদের বোতল ছিল, যা নাচের তালে তালে খেতে থাকেন তিনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দলীয় পদ ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে সবুজ। তার স্ত্রী ও দুটি সন্তান রয়েছে। তারপরও পাশের ৪ সন্তানের জননী (৩৪) এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া করেন তিনি। মাঝেমধ্যেই ওই নারীর বাড়িতে এসে দেখা করতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল শনিবার সকালে ওই নারীর সঙ্গে ফের দেখা করতে এলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলেন। পরে তাকে চেয়ারে বেঁধে গণধোলাই দেন।
ওই নারীর স্বামী বলেন, মোবাইলে আমাকে মাঝেমধ্যে হুমকি দিত সবুজ। তাই শনিবার সকালে আমরা তাকে ধরে চেয়ারে বেঁধে পিটিয়েছি। তবে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি।
তবে এসব ঘটনা ষড়যন্ত্র ও সাজানো বলে দাবি করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. সবুজ সরদার। তিনি বলেন, আমি ঢাকায় ব্যবসা করি। স্থানীয় বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার সঙ্গে এই আরচণ করা হয়েছে। ভিডিওগুলোও এডিটিং করা।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল বলেন, সবুজ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। তবে কারও ব্যক্তি অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না। আমি ভিডিওগুলো দেখেছি। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে সবুজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, ভাইরাল ভিডিও দুটি আমি দেখেছি। এটি সত্য প্রমাণিত হলে ওই নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সালথা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ভাইরাল ভিডিও’র বিষয়েও কিছু বলতে পারব না।
জহির হোসেন/এমজেইউ