রায়হান হত্যা মামলার চার্জশিট বুধবার
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার সাত মাসের মাথায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (৫ মে) বেলা ১১টায় আদালতে আলোচিত এ হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান। চার্জশিট জমা দেওয়ার পর দুপুর ১২টায় পিবিআই সিলেটে অফিসে প্রেস ব্রিফিং করে মামলার পুরো তদন্ত কার্যক্রম ও আসামিদের ব্যাপারে অবগত করা হবে।
পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান বলেন, চার্জশিট প্রস্তুত হয়ে গেছে। তদন্তে যাদেরই সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে। তবে কাদেরকে আসামি করা হচ্ছে তা এখনই বলতে নারাজ এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও নিখুঁত তদন্তের স্বার্থে আলোচিত এ মামলাটির আসামি পুলিশ হওয়ায় একটি নির্ভুল, ত্রটিমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য চার্জশিট তৈরি করতে কিছুটা সময় লেগেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্তে রায়হানকে নির্যাতনের সঙ্গে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, বরখাস্ত হওয়া টুআইসি এসআই হাসান আলীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নাম উঠে এসেছে। তবে রায়হান হত্যার পর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পরিবর্তন ও এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে পালাতে সহায়তাকারী আবদুল্লাহ আল নোমানকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হবে কি-না তা এখনও পরিষ্কার নয়।
ঘটনার পর বন্দরবাজার ফাঁড়ির সাময়িক বরখাস্ত ছয় পুলিশকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তারা হলেন- বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, টুআইসি এসআই হাসান আলী, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, কনস্টেবল তৌহিদ মিয়া ও কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস। অভিযুক্ত ছয়জনই কারাগারে রয়েছেন। তবে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবকারী আব্দুল্লাহ আল নোমান পলাতক রয়েছেন।
রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, দেরিতে হলেও মামলার অভিযোগপত্র প্রস্তুতের খবরে আমরা খুশি। দ্রুত বিচারকাজ শুরু করে হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
গত বছরের ১১ অক্টোবর রাতে সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে নগরের কাষ্টঘর সুইপার কলোনি থেকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে এনে নির্যাতন চালানো হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে পড়লে পরদিন ভোরে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সকাল ৭টা ৫০মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু আইনে মামলা করেন।
তুহিন আহমদ/আরএআর