শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, বেড়েছে ভোগান্তি
বৃষ্টি না থাকায় মহারশি, সোমেশ্বরী, ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বাড়ছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। ফলে নতুন করে শেরপুর সদরের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবার শঙ্কা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টির ফলে শেরপুরের ৩টি নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এসব এলাকায় পানি কমে যাওয়ায় ভেসে উঠতে শুরু করেছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। ৪টি উপজেলায় পানিবন্দি রয়েছে অন্তত এক হাজারের বেশি পরিবার।
দুইটি উপজেলার বিভিন্নস্থানে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে শতাধিক মাছের ঘের, বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ২০টি বসতবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক কিলোমিটার কাচা-পাকা সড়ক। এখনো পানিবন্দি রয়েছে প্রায় এক হাজার পরিবার। ৩০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের বীজতলা, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশকিছু রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও গাছপালা।
ঝিনাইগাতীতে প্রবল ঢলের স্রোতে মহারশী, সোমেশ্বরী নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ঝিনাইগাতী বাজার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা পরিষদসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। একইসাথে উপজেলার রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, ধানশাইল, কাংশা, ঝিনাইগাতী, চতল ও বনগাঁওসহ অন্তত ২০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করে।
নালিতাবাড়ীর ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে প্রবল বেগে ঢল নামে। উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের সন্ন্যাসীভিটা নয়াপাড়া এলাকায় ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায়। পৌর শহরের গড়কান্দা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। খালভাঙ্গা এলাকায় অন্তত তিনশ মিটার বাঁধ উপচে আশপাশের এলাকায় ঢলের পানি প্রবেশ করে। মঙ্গলবার সকালে গোল্লারপাড় এলাকায় শেরপুর-নালিতাবাড়ী সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়, ফলে ব্যাহত হয় যানচলাচল। পরে বিকেলে পানি নেমে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে নদীগুলোর ভেঙে যাওয়া বাঁধ জরুরি মেরামতের জন্য কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নকিবুজ্জামান খান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার যে বাধগুলোর ক্ষতি হয়েছে সেগুলো মেরামতের জন্য আমাদের কাজ শুরু হয়েছে।
আরকে