চিকিৎসক সংকটে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন অফিস সহকারী
ঠাকুরগাঁওয়ে ৯টি প্রাণিসম্পদ দপ্তরে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পশু চিকিৎসা। চিকিৎসকের অনুপস্থিতে ব্যবস্থাপত্র দেন হাসপাতালের অফিস সহকারী ও কৃত্রিম প্রজননকর্মীরা। এতে ভালো সেবা মিলছে না বলে অভিযোগ সেবা প্রত্যাশীদের।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার প্রাণিসম্পদ ৯টি দপ্তরের অনুমোদিত পদ রয়েছে ১২৩টি। এসব পদে কর্মরত আছেন ৪৯ জন। বাকি ৭৪টি পদ রয়েছে শূন্য। এছাড়া জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ও একটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নেই।
সম্প্রতি জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল ও সদর উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক না থাকায় বিভিন্ন পশুর চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন হাসপাতালের কর্মরত অফিস সহকারী ও কৃত্রিম প্রজননকর্মীরা।
শহরের মন্দিরপাড়া এলাকার জুলেখা বেগম বলেন, আমার গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত। সকাল সাড়ে ১১টায় হাসপাতালে এসেছি। এখন বেলা ১টার মতো বাজে। ডাক্তার নেই। পরে অফিসের লোকজন চিকিৎসা দিয়েছে।
শহরের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা মকসেদ আলী বলেন, গরুর অসুস্থ বাছুর অটোভ্যানে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার নেই। কম্পাউন্ডারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছি।
উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের কৃত্রিম প্রজনন কর্মী মিজানুর রহমান বলেন, স্যারের (ভেটেরিনারি সার্জন) পরামর্শে চিকিৎসা দিচ্ছি।
তবে চিকিৎসক ছাড়া ব্যবস্থাপত্র লেখার অনুমতি নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেমন্ত কুমার রায়।
ভেটেরিনারি সার্জন রোকনুজ্জমান বলেন, সদরের ২৩টি ইউনিয়নে একজন ভেটেরিনারি সার্জন দিয়ে চলে পশু চিকিৎসা। বাইরে চিকিৎসা দিতে গেলে তখন হাসপাতালে যারা পশু নিয়ে আসেন তাদের চিকিৎসা দেন উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও কৃত্রিম প্রজনন কর্মী।
জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বলেন, গত ৬ মাস ধরে সার্জন নেই এ হাসপাতালে। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ট্রেনিং অফিসার ডা. নুরুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি অনেক সময় বাইরে যান। এ কারণে আমিসহ এনিমেল এটেনডেন্ট লুৎফর রহমান, অফিস সহকারী রতন কুমার পশু চিকিৎসা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আবুল কালাম আজাদ বলেন, পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় অনেক সময় প্রাণী চিকিৎসা অফিস স্টাফরা দিয়ে থাকে। এসব বিষয়ে তাদের ট্রের্নিং রয়েছে। তবে চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ব্যবস্থাপত্র ও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লিখতে পারবেন না কেউই। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরিফ হাসান/এসকেডি