পিরোজপুরে জিও ব্যাগেও ঠেকানো যাচ্ছে না নদী ভাঙন
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীতে প্রতি বছরই পানি বৃদ্ধি পেলেই শুরু হয় ভাঙন। নদীপাড়ের পরিবারগুলো বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ে। নদীর পাড়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার পরও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতি বছর নদী ভাঙন রোধে নেওয়া হয় বিভিন্ন ব্যবস্থা। তবে কিছুই কাজে আসছে না। এ বছর উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়নের স্টিমার ঘাট এলাকায় নতুন করে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মাছুয়া ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীতে প্রায় ৫০০ মিটার নদীর পাড়জুড়ে ভাঙন ঠেকাতে সারি সারি বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু তাতেও ঠেকানো যাচ্ছে না নদী ভাঙন। নদী তীরের রাস্তা ভাঙনের কবলে পড়ায় সেখান দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগীরা জানান, সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শুরু এবং শেষের দিকে নদী ভাঙন দেখা দেয়। পাশাপাশি অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাসে বেড়ি বাঁধগুলোর ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই এলাকায় ইতোপূর্বে কয়েকবার জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থাই কাজে আসছে না। ভাঙনের ফলে মাছুয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। এই ভাঙন রোধ করা জরুরি। গৃহহীন হয়ে পড়ছে এখানকার মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মাছুয়া স্টিমার ঘাট এলাকায় ৫০০ মিটার নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজ ব্লক দ্বারা স্থায়ীকরণ করার জন্য খরচ হবে ৪৭ কোটি টাকা। যা পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করা আছে। বর্তমানে ৩০০-৫০০ মিটার জায়গাজুড়ে বেড়ি বাঁধ রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে, যাতে টেকসই থাকে। জিও ব্যাগ প্রকল্পে আনুমানিক ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
মাছুয়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া এলাকার মো. একরাম হোসেন বলেন, কয়েক বছরের নদী ভাঙনে আমাদের এলাকার বেশ কিছু অংশ বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও থাকবে না। প্রতি বছরই একটু একটু করে নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন একেবারেই বসতবাড়ির সামনে চলে এসেছে। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে একটি স্থায়ী বাধ নির্মাণের দাবি জানাই।
একই গ্রামের অতুল চন্দ্র সাহা বলেন, বেড়ি বাঁধ থেকে অনেক দূর পর্যন্ত ফসলি জমি ও বসতবাড়ি ছিল। নদী ভাঙনে সব বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে ভাঙন সৃষ্টি হয়। কিছু জায়গার জিও ব্যাগ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হলে হয়তো ভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো।
পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুসাইর হোসেন জানান, মঠবাড়িয়া উপজেলার মাছুয়া ইউনিয়নের স্টিমার এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ি বাঁধে জিও ব্যাগ ফেলে প্রতিরক্ষা করার চেষ্টা করছি। ব্লকের প্রজেক্ট দেওয়া আছে। বরাদ্দ পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।
আরএআর