মেঘনা উপকূলে দেখা মিলছে রাসেলস ভাইপারের
গত কয়েকবছর ধরে চাঁদপুরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় একের পর এক দেখা মিলছে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া) । সর্বশেষ দেখা মিলে শহরের পুরাণ বাজার হরিসভা এলাকায়।
শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে হরিসভা মেঘনা নদীর পাড়ে শহর সংরক্ষণ বাঁধে কাজ করা শ্রমিকরা বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলতে গিয়ে রাসেলস ভাইপারের দেখা পান। তবে এখন পর্যন্ত মেঘনা উপকূল ছাড়া জেলার সমতল এলাকায় এই সাপের দেখা মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা কার্তিক বলেন, শ্রমিকরা রাসেলস ভাইপার সাপ দেখলে চিৎকার দেন। এ সময় স্থানীয় বিভিন্ন বয়সী লোকজন ছুটে আসে। এরপর সাপটিকে কারেন্টজাল দিয়ে মুড়িয়ে এবং পিটিয়ে মেরে ফেলে কিশোর ও যুবকরা। পরে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়।
গত কয়েক বছর মেঘনা উপকূলীয় এলাকা চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোড, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও হাইমচর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় এই রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মেলে। এর মধ্যে শহরের কোড়ালিয়া রোডে ধরা পড়া রাসেলস ভাইপার সাপটি বন বিভাগ নিয়ে যায়। বাকি অন্য স্থানে ধরা পড়া সাপগুলো স্থানীয়রা পিটিয়ে মেরে ফেলে।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, যেকোনো বিষধর সাপে কামড়ালে কোনো ওঝার কাছে না নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে আনতে হবে। কামড়ের সাথে সাথে যতটা দ্রুত হাসপাতালে আনা যায়, ততটাই ভালো হবে।
তিনি আরও বলেন, সাপে কামড়ে সাথে সাথে কামড়ের উপরের স্থানে কোনো রশি দিয়ে বাঁধা যাবে না। সেখানে গামছা বা ওড়নাসহ সুতি জাতীয় কাপড় দিয়ে হালকা করে বাঁধতে হবে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, যে কোনো বিষাক্ত সাপে কামড়ালে বিষ প্রতিষেধকের একই অ্যান্টিভেনম ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। আমাদের হাসপাতালে ১৩০টি অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে। পাশাপাশি আরও ২০০ চাহিদার কথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। শিগগিরই সেগুলো পাঠানো হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকরা রাসেলস ভাইপার ধরেছে কি না বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে নদীর পাড়ে শ্রমিকদের সাবধানতার অবলম্বন করার জন্য বলা হয়েছে ।
চাঁদপুর জেলা বন বিভাগ বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকদিন আগে মতলব উত্তর থেকে একটি রাসেলস ভাইপার সাপের বাচ্চা উদ্ধার করেছি। তবে হরিসভা মেঘনা নদীর পাড়ে শহর সংরক্ষণ বাধে কাজ করা শ্রমিকরা বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলতে গিয়ে রাসেলস ভাইপারের দেখা মিলেছে এমন তথ্য আমার জানা নেই। নদীর উপকূলীয় এলাকায় দুই -একটি সাপ আসতে পারে। আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। কেউ এ সাপ দেখলে আমাদের খবর দেওয়া অনুরোধ করছি।
আনোয়ারুল হক/এসকেডি