মাছের সাথে উঠে এলো বিষধর রাসেলস ভাইপার
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মাছের সাথে উঠে এসেছে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপ। তবে সাপটিকে তাৎক্ষণিক পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের কাটাখালী ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত রোববার দিবাগত রাত ২টায় উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের তমরদ্দি ঘাটে একটি রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মিলে। ওই সাপটিকেও পিটিয়ে মেরে ফেলেন স্থানীয়রা।
মাছের সঙ্গে বিষধর এ সাপ উঠে আসার ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা নুর উদ্দিন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাড়ির পাশের দুইজন জেলে মাছ ধরে বাড়ি ফিরে। তাদের ধরা মাছের সঙ্গে একটি সাপও উঠে। তারা তাৎক্ষণিক সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। তবে তারা জানতেন না যে এটা রাসেলস ভাইপার।”
আমতলী বাজারের সাধারণ সম্পাদক এনাম চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি দেখার পর সাপটিকে চিনতে পারি। তবে জেলে দুইজন সাপটিকে চিনতে পারেনি। আমি সচেতনতার জন্য সাপটিকে আমতলী বাজারে নিয়ে আসি। কয়েকদিন আগে তমরদ্দি ইউনিয়নে রাসেলস ভাইপারের সন্ধান পাওয়া যায়। এখন জাহাজমারা ইউনিয়নে পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে গেছে।
রাসেলস ভাইপার সাপটি খুবই বিষধর। ২০১৩ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার বরেন্দ্র গ্রামে এক কৃষককে এবং গত বছর রাজশাহীর তানোর এবং নওগাঁর ধামইরহাটে আরও দুইজনকে এই সাপটি কামড় দেয়। চিকিৎসাধীন থাকার পরও তাদের শরীরে পচন ধরে যায়। পচন ধরা অংশ কেটে ফেলার পরও তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাসেলস ভাইপার সাপটি খুবই বিষধর এবং দুর্লভ সাপ। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় এটি দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি নোয়াখালীতেও দেখা গেল। জাহাজমারা ইউনিয়ন ও তমরদ্দি মাছ ঘাটে পিটিয়ে মারা সাপটি রাসেলস ভাইপার। এর আগে ডিসেম্বর মাসে প্রথম হাতিয়ায় সাপটি দেখা মেলে। আমরা জীবিত উদ্ধার করে গবেষণার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছিলাম। এই ধরনের বিষধর সাপ দেখতে পেলে বিশেষজ্ঞদের জানানোর পরামর্শ দিচ্ছি। সাধারণ মানুষকে সাপের কাছে না যাওয়ার অনুরোধও করছি।
নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাপ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, প্রয়োজন সচেতনতা। প্রত্যেক উপজেলা হাসপাতালসহ নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম মজুত রাখা হয়েছে। সাপ কাটলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। তবে ওঝা বা ঝাড়ফুঁকের অপেক্ষা করে কালক্ষেপণ করা যাবে না। অনতিবিলম্বে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে এক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
হাসিব আল আমিন/এমটিআই