দুধকুমার নদের ভাঙনে কবর বিলীন, মিলল ৮ বছর আগে দাফন করা মরদেহ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুধকুমার নদের ভাঙনে গত ৮ বছর আগে দাফন করা এক ব্যক্তির কাফনের কাপড়সহ অক্ষত মরদেহ বের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (২৬ জুন) উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের চর বলদিয়া গ্রামের কালিরহাট পাঁচ মাথা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
মৃত ব্যক্তির নাম মহেজ আলী। তিনি একই গ্রামের মৃত জপির মন্ডলের ছেলে এবং সোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আকবর আলীর বাবা।
ইউপি সদস্য আকবর আলী বলেন, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে আমার বাবা মারা যান। বাড়ির পাশেই আমার বাবাকে দাফন করা হয়। কিছু দিন আগে দুধকুমার নদের ভাঙনে আমাদের বসতভিটা নদীতে চলে গেলে আমরা সপরিবারে কালিরহাট বাজারের পাশে নতুন করে বাড়ি করি। শুধু বাবার কবরটা নদীর গর্ভে বিলীন হওয়া বাকি ছিল।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদ পাই বাবার কবর নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। খবর পেয়ে আমরা তিন ভাই মিলে বাবার কবরের পাশে গিয়ে দেখতে পাই কবরের অর্ধেক ভেঙে গেছে এবং কবরের ভিতরে সাদা কাপড় দেখা যাচ্ছে। পরে তিন ভাই মিলে কবরে নেমে কাফনের কাপড়সহ বাবার মরদেহ তুলে আমাদের নতুন বাড়িতে নিয়ে আসি। মসজিদের ইমাম সাহেবের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন করে কবর খুড়ে জানাজা ছাড়াই দাফন করি। আমার বাবা নিয়মিত জামাতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন এবং ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতেন।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক ও কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মো. মাহবুবুল আলম জানান, মহান আল্লাহর খালেস বান্দাদের অক্ষত মরদেহ পাওয়ার বিষয়ে অনেক খবর আমরা পাই। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় মারা যায়, তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত। কিন্তু তা তোমরা উপলব্ধি করতে পার না।’ তাই এটি অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। এসব মরদেহ জানাজা ছাড়াই দাফন করতে হয়। তবে কেউ যদি পুনরায় জানাজা করতে চায় তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
সোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম লিটন ঘটনার বলেন, আমি শোনামাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পুনরায় মরদেহ মাটি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জুয়েল রানা/আরএআর