সাইলোর মতো খাদ্যভাণ্ডার ছিল বলেই করোনা-যুদ্ধ অতিক্রম করতে পেরেছি
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, সাইলোর মতো খাদ্যভাণ্ডার ছিল বলে এবং সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা হয়েছে বলেই করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বড় বড় সমস্যা অতিক্রম করতে পেরেছি। বড় বড় সংস্থাগুলো বলছিল অনেক দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। আর সেই তালিকায় বাংলাদেশের নামও ছিল।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সাইলোর আধুনিকায়নের কাজের সমাপ্তি শেষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মো. শাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আশুগঞ্জ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আশুগঞ্জের এই সাইলো নতুন করে গড়তে খরচ হত ৭০০-৮০০ কোটি টাকা। তবে এটি শুধু আধুনিকায়নে ৪৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এতে ১০০ বছরেও এই সাইলোর কিছু হবে না।
তিনি আরও বলেন, সাইলোর মতো খাদ্যভাণ্ডার ছিল বলেই করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বড় সমস্যা অতিক্রম করেছি। কিন্তু আমরা জনগণকে বুঝতেও দিইনি। আমরা জানি পেট ঠান্ডা থাকলে মাথা ঠান্ডা থাকবে। আর সেই পেট ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থাটা করে রাখা হয়েছিল।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, একসময় বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষ বাসি ভাত খেত। গন্ধযুক্ত আটার রুটি খেতে হত। কিন্তু এখন ধনীরা রুটি খায়, আর গরিবরা তিনবেলা ভাত খায়। ধনীরা রুটি খায় ডায়াবেটিসের ভয়ে আর গরিবরা ভাত খায় শক্তির জন্য। তবে দুঃখের বিষয় সেই চালের পুষ্টি রাখা হচ্ছে না। চাল পলিস করতে করতে পুষ্টি নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকেও আমাদের ফিরে আসতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন খাদ্যের কোনো কমতি নেই। তবে খাদ্যের পুষ্টির সমস্যা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে। তাই খাদ্যে যেন কেউ ভেজাল না দেয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’ প্রধানমন্ত্রী এদিকেই এগোচ্ছেন এবং সেই নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাই আমাদের নিজ জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই আমরা এই বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নয়, ২০৩১ সালের মধ্যেই সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে এই সাইলোর ধারণক্ষমতা ছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টন। তবে সেটি এখন বাড়িয়ে ২৩ লাখ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা করা হয়েছে। তাছাড়া আগামী জুনের মধ্যে আরও যোগ হবে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন। এমনকি ১৬৫টি নতুন গোডাউন তৈরি করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
বক্তব্য শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাইলোর আধুনিকায়নের সফল সমাপ্তি কাজ শেষে উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
মাজহারুল করিম অভি/এমজেইউ