বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি নিয়ে ঢাকায় ঘুরতে গেছেন ৬ ছাত্রলীগ নেতা
জামালপুরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৬ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের জন্য একটি মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে নিজেদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেন।
বুধবার (১২ জুন) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাউসার আহমেদ স্বাধীন ও যুগ্ম আহ্বায়ক তাইফুল ইসলাম পলাশের নেতৃত্বে মোট ৬ জন মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। বৃহস্পতিবার বেলা বারোটা পর্যন্ত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি নিয়ে ফিরেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই বছর আগে ছাত্রলীগের প্রথমবারের মতো আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়। এরপর আর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ঈদের পরে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার কথা রয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কসহ ৬ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। কর্মচারীদের জন্য ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি ছিল ঢাকা মেট্রো চ- ৫৬-৩৮৭৩। ওই গাড়ির চালক বাবু মিয়া নামে একজন।
এদিকে কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য মাইক্রোবাসটি ছাত্রলীগ নেতারা ঢাকায় নিয়ে চলে যাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি ভাড়া মাইক্রোবাস নিয়ে জামালপুর শহর থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাওয়া আসা করেন।
তারা ঢাকায় ঘুরতে গিয়ে যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাররম হোসাইন তার ফেসবুক আইডি থেকে গাড়িতে বসে থাকার ছবিও আপলোড করেন। ওই ছবিতে দেখা যায়, যুগ্ম আহ্বায়ক তাইফুল ইসলাম পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাররম হোসাইন, নাজমুল ইসলাম, এন সাকলাইন ও সদস্য ইখতিয়ার উদ্দিন ইমন। এবং আহ্বায়ক কাউসার আহমেদ স্বাধীন তার ফেসবুক আইডি থেকে মাওয়া ফেরি ঘাটে ঘুরতে যাওয়ার ছবি ও আপলোড করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, তারা মূলত ঢাকায় নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। ক্যাম্পাস থেকে সকালে মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে তারা রওনা হন।
এ বিষয়ে জানতে আহ্বায়ক কাউসার আহমেদ স্বাধীন ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোকাররম হোসাইনকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
গাড়িটির চালক বাবু মিয়াকেও একাধিক বার কল দিলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল ওই গাড়ির চালক রাব্বি বলেন, গতকাল সারাদিন বিশ্ববিদ্যালয় গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। আমি ড্রাইভার ছিলাম। কত টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করেছিল তা আমি জানি না।
পরিবহন পুলের আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক পার্থ সারথি দাস বলেন, গাড়িটি আমাকে না জানিয়ে তারা নিয়ে গেছে। এ বিষয়টি আমি গতকাল জানতাম না। আজ আমি বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফারুক হোসেন, গাড়ি নেওয়ার বিষয়টি জানা নাই আমার। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয়ে গেছে চলে যাচ্ছি।
রকিব হাসান নয়ন/এমএএস