ঋণের চাপ, ৭ জনের নাম লিখে পৃথিবী ছাড়লেন ব্যবসায়ী
ঠাকুরগাঁওয়ে ঋণের চাপে শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন। এর আগে তিনি ৭ জনকে দায়ী করে একটি চিরকুট লিখে গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ভোরে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মাদরাসা পাড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। তার বাবার নাম মৃত জয়নাল আবেদীন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার সদর থানার ওসি এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্ভবত রাত তিন থেকে চারটার দিকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সকালে তার লাশটি ঘরের বারান্দায় দেখতে পায় তারা। পরে তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই চিরকুটে ৭ জনের নাম রয়েছে।
পরিবারের লোকজন জানায়, কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সেটা জানি না। আমরা টাঙ্গাইল থেকে এসেছি। আমাদের এখানে আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শফিকুল ফেরি করে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। এছাড়াও পুলিশ লাইন্স এলাকায় তার একটি পানের দোকান রয়েছে। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাতজন। তার পাঁচ মেয়ে ও ১ জন ছেলে রয়েছে। পরিবার চালাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন। এজন্য বেশ কয়েকজনের কাছে ঋণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাওনাদাররা ঋণের টাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতেন বলে জানা গেছে। এতেই তিনি চিরকুটে সাতজনের নাম লিখে আত্মহত্যা করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, শফিকুলের কাছে বেশ কয়েকজন টাকা পেত। সেই টাকার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল হয়তো। চাপ সহ্য করতে না পেরেই হয়তো তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
চিরকুটে যে সাতজনের নাম লিখে গেছেন তারা হলেন, মো. জুয়েল ইসলাম, মো. হুমায়ুন কবীর, মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. হাবু ও পৌর শহরের কলোনির একজন।
এ বিষয়ে চিরকুটে যাদের নাম রয়েছে তাদের একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না। তবে যাদের নাম রয়েছে তাদের অনেকের সঙ্গে তার অর্থনৈতিক লেনদেন ছিল সেটা আমি জানি। তবে সম্প্রীতি তাদের কী হয়েছে এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।
এ ঘটনায় মো. হুমায়ুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মানুষকে লোন দিয়ে থাকি। তবে শফিকুল ইসলামকে কোনো প্রকার লোন দেইনি। তিনি আমার নাম কেন লিখেছেন সেটা আমি জানি না। তবে আমি ছাড়া বাকি কয়েকজনের সঙ্গে তার লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ওসি এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। তিনি চিরকুটে কয়েকজনের নাম লিখে আত্মহত্যা করেছেন এটি কি তিনি লিখেছেন নাকি কাউকে ফাঁসানোর জন্য অন্য কেউ লিখে রেখেছেন সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এ মুহূর্তে অন্য কিছু বলা সম্ভব না।
আরিফ হাসান/এমএএস