আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিতে থানায় তিন শতাধিক সমর্থকের হামলা
মোস্তাক শিকদার নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শৈলকুপা থানায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে পুলিশের তিন সদস্যকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ঢাকাতে রেফার্ড করা হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, মো. আব্দুস সালাম, মো. ইকবাল হোসেন ও মো. তরিকু মিনা।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে উপজেলার ধাওড়া গ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুস্তাক শিকদারকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী একটি মারামারি মামলার ৪৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। গত ২৩ মে মামলাটি দায়ের হয়। মুস্তাক শিকদার স্থানীয় সংসদ সদস্য নায়েব আলী জোয়ারদারের সমর্থক।
গ্রেপ্তারের পর শত শত লোক থানায় গিয়ে ঘেরাও করে। এ সময় তারা থানায় ইট পাটকেল ছুড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় পুরো থানা চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলে হামলা পালটা হামলা। এতে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকজন। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
শৈলকুপা থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার এসআই জলিল ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ করে দল বেঁধে লোক জন আসতে দেখে গেট বন্ধ করে দিই। তারপরও হামলাকরীরা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের ধাক্কায় আমি পড়ে যাই। এসময় তারা থানার ভেতরে ঢুকে ইট পাটকেল ছুড়ে। তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশও তাদের প্রতিহত করে। ওই সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে এভাবে থানায় মামলা করা খুবই দুঃখজনক।
শৈলকূপা থানা পুলিশের ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোস্তাক শিকদার নামে এক এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে প্রায় তিন শতাধিক মানুষ থানায় হামলা চালায়। এসময় পুলিশসহ অনেকে আহত হয়েছে। তবে কত রাউন্ড গুলি বর্ষণ হয়েছে সেটা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া বলেন, এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। হামলায় ৬ পুলিশ আহত হয়েছেন। আহত এক পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, হামলায় যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ টিয়ার শেল ও সটগানের গুলি ব্যবহার করেছে। তবে কত রাউন্ড সেটি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
আব্দুল্লাহ আল মামুন/এমএএস