ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে হুমকির মুখে বসতভিটা-ফসলি জমি
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে কোনো কাজেই আসছে না জিও ব্যাগ। হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, বাড়ি, সহসানন্দবাড়ি বাজার, পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি গ্রামের বসতভিটা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চর আমখাওয়া ইউনিয়নের পাটাধোয়া পাড়ায় ব্রহ্মপুত্র নদে গত জানুয়ারি-ফেব্রয়ারি মাসে ভাঙন দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু গত মাসে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জিও ব্যাগ ফেলা অবস্থায় আবারও দেখা দিয়েছে ভাঙন। কোনো কাজেই আসছে না জিও ব্যাগ। ইতোমধ্যে সাত শতাধিক বসতভিটা, ৩০০ একর ফসলিজমি, পাটাধোয়াপাড়া জামে মসজিদ, পাটাধোয়াপাড়া নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছে দিন দিন। এ নদের পূর্ব তীরের পাটাধোয়াপাড়ায় ভাঙন রোধে কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আবার কিছু জায়গায় ফেলার জন্য জিও ব্যাগ প্রস্তুত করা হয়েছে। জিও ব্যাগ ফেলা অবস্থা প্রায় ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে শতবর্ষী সানন্দবাড়ি বাজারসহ ফসলি জমি, বসতবাড়ি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদে ওই ভাঙন এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। পরে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স এমইউবিএমএমবি (জেবি) নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। পরে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ কাজটি করার অনুমোদন দেওয়া হয়। কাজটি শেষ করার জন্য আগামী বছরের ১৩ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
পাটাধোয়াপাড়ার করিম শেখ বলেন, আমাদের অনেক ফসলি জমি নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। ফসলি জমি ভেঙে নেওয়ায় খুব কষ্টে জীবন চলছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে শেষ সম্বল বসতভিটাটুকুও হয়তো রক্ষা করতে পারব না। আমরা সরকারের কাছে একটি স্থায়ী বাঁধ চাই।
একই এলাকার কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, প্রতিদিন ভাঙছে ফসলের জমি, ভাঙতে ভাঙতে এখন বাড়ির কাছে চলে এসেছে। এভাবে আর কিছুদিন ভাঙলে বাড়িঘর চলে যাবে। হুমকির মুখে রয়েছে হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বসতবাড়ি। বর্তমানে বাঁধ ছাড়া অন্য কিছুতে এ ভাঙন ঠেকানো যাবে না।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। জিও ব্যাগ ভাঙন রোধে অনেকটা কাজে আসবে। তাছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কাজ করা হবে।
রকিব হাসান নয়ন/আরএআর