খাগড়াছড়িতে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট
খাগড়াছড়িতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে পশুর হাট। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বেচাকেনা। হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা আসছেন। ক্রেতা বিক্রেতায় মুখর খাগড়াছড়ি জেলার প্রতিটি পশুর হাট।
পার্বত্য এ জেলায় ছোট ছোট বেশ কিছু খামারে পালন করা হয় দেশি-বিদেশি জাতের গরু। তবে এখানকার অধিকাংশ গরু, ছাগল স্থানীয় কৃষকেরা লালনপালন করেন। এসব গরু, ছাগল প্রাকৃতিক পরিবেশে পাহাড়ের লতাপাতা ঘাস খেয়ে বেড়ে উঠে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর কোরবানি উপযোগী গরু রয়েছে ১২ হাজার ২৬টি, ছাগল ৪২ হাজার, মহিষ ২৪টি ও ভেড়া ৪২৫টি। খাগড়াছড়ি জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৬টি হাট রয়েছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার গরুর হাটে গরু কিনতে আসা মো. আকতার হোসেন জানান, বাজারে গরু বিক্রেতার চেয়ে ব্যবসায়ী আর দালালের উপস্থিতি অনেক বেশি। এ কারণে গরুর দাম অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে। যে গরু ১ লাখ টাকায় বিক্রি হবে তার দাম চাওয়া হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।
বরুণ চাকমা নামে স্থানীয় একজন জানান, তিনি হাটে ৮টি গরু নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে তিনটি গরু বিক্রি করেছেন। কোরবানির এখনো অনেক সময় বাকি থাকায় ক্রেতারা দরকষাকষি করছেন। সামনের হাটে বিক্রির পরিমাণ বাড়বে বলে জানান তিনি।
তবে পশু বিক্রেতাদের অভিযোগ, এ অঞ্চলে তিন চারটি গ্রুপকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা দেওয়ার কারণে প্রতিটি গরুতে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ পড়ে যায়। ফলে গরুর ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন গরুর মালিক।
কোরবানি হাটকে কেন্দ্র করে জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হাটগুলোতে স্বাভাবিক পোশাকে টহল দিচ্ছে পুলিশ। জাল টাকা শনাক্ত করতে ব্যাংক কর্মকর্তারা কাজ করছে পাশাপাশি রোগাক্রান্ত পশু শনাক্ত করতে হাটে রয়েছে পশু চিকিৎসক।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জরহর লাল চাকমা জানান, খাগড়াছড়িতে গত বছর ২৫ হাজারের বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে। জেলার কোরবানি চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পশু দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হয়।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গরুর হাট কেন্দ্রিক গোয়েন্দা নজরদারিসহ সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল রয়েছে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। হাটে পশু বিক্রি করে বিক্রেতারা যেন অর্থ নিয়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে পুলিশ সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে।
মোহাম্মদ শাহজাহান/এএএ
