ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড স্কুল, পাঠদান নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীরা
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকা পটুয়াখালীর কলাপাড়া। গাছ পালা, মাছের ঘের, বসতবাড়িসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কলাপাড়ার মেনহাজপুর হাক্কানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। ভেঙে গেছে স্কুলের চালা, হেলে পড়েছে পুরো স্কুল। এমনকি শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে। বিদ্যালয়টি ভেঙে পড়ায় ক্লাস পরীক্ষা চলমান থাকলেও শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।
বুধবার (২৯ মে) উপজেলার মেনহাজপুর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের পতাকা উড়ছে, শিক্ষকরা বসে আছেন। তবে, নেই কোনো শিক্ষার্থী। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব কাটিয়ে উঠার পরে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসলেও ক্লাস করার মতো জায়গা না থাকায় ফিরে গেছে। তবে এই সংকট দ্রুতই কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফ উজ্জামান জানান, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামে অবস্থিত স্কুলটি আশেপাশের সাত থেকে আটটি গ্রামের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। আন্দারমানিক নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই স্কুলটিতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা তালতলীরও অনেক শিক্ষার্থী পড়তে আসে। তবে এখন যে পরিস্থিতি তাতে এই প্রতিষ্ঠানটি খুব জরুরি মেরামত করা দরকার।
বুধবার ক্লাস করতে আসা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রবিউল হোসেন বলেন, ক্লাস পরীক্ষা থাকায় আমরা সকাল সকালেই স্কুলে চলে আসি। কিন্তু স্কুলে এসে দেখি পুরো স্কুলটি ভেঙে মাটিতে পড়ে আছে। পরীক্ষা দেওয়ার মতো কোনো পরিবেশ নেই। তাই আমরা ফিরে আসি।
মো. জলিল নামের এক অভিভাবক বলেন, আমাদের এই সাত-আট গ্রাম মিলে একটি স্কুল। আমরা সবাই জেলে ও খেটে খাওয়া মানুষ। এই স্কুলটি ছাড়া আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কোনো স্কুল নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব স্কুলটি মেরামত করার জন্য অনুরোধ করছি।
কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, কলাপাড়া উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৪টি কলেজ, ১২টি স্কুল ও ২৫টি মাদরাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই টিনশেডের ঘর। পুরো উপজেলা জুড়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আমরা এ সকল প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পাঠদানের ব্যবস্থা নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের একটি ব্যবস্থা করে দেব। এ নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে পুরো উপজেলা লন্ডভন্ড। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পরে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার জন্য ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হবে।
এসএম আলমাস/এএএ