ফের জোয়ারে প্লাবিত নিঝুমদ্বীপ, পানিবন্দি ৩০ হাজার মানুষ
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় টানা বর্ষণ ও জোয়ারে পানিতে ফের নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। সোমবার (২৭ মে) দুপুর থেকে নিঝুমদ্বীপের চারপাশে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নয় ওয়ার্ডের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। এর আগে গতকাল দুপুর ও রাতে জোয়ারের ফলে দুইবার পুরো নিঝুমদ্বীপ প্লাবিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, দিনভর টানা বর্ষণ ও দুপুর ২টা থেকে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে পুরো নিঝুমদ্বীপ প্লাবিত হয়েছে। ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে। বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় নিঝুমদ্বীপ।
নিঝুমদ্বীপের বন্দর টিলা এলাকার পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তৃতীয় বারের মতো মদিনা গ্রাম, বন্দর টিলা, নামার বাজার, ইসলামপুর ও মোল্লা গ্রামসহ পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি। মানুষ বারবার জোয়ারে নিজেদের সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
নামার বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. মামুন সোহেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, নামার বাজারসহ আশপাশের সকল রিসোর্ট তলিয়ে গেছে। রাতে আরেকবার জোয়ার হবে। মানুষ বারবার জোয়ারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আল্লাহ রক্ষা না করলে আর রক্ষা করার সুযোগ নেই। সব তলিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কেফায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল ভয়াবহতাই পুরা নিঝুমদ্বীপ পানির নিচে। মানুষ আজ অসহায়। আল্লাহ আপনি সহায় হোন। বেড়িবাঁধ না থাকায় নিঝুমদ্বীপের প্রধান সড়কসহ সব তলিয়ে গেছে। আমার বিভিন্ন কৃষি জমিসহ লাখ লাখ টাকার ফসল তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে গেছে পুরো ইউনিয়নের ৩০ হাজার বাসিন্দা।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা জোয়ারের ফলে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জোয়ার এখনো চলমান আছে। আমরা এই মুহূর্তে ক্ষতির পরিমাণ বলতে পারছি না। নিঝুমদ্বীপের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খোঁজ রাখছি। কোথাও কোনো ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাসিব আল আমিন/এএএ