মহাবিপদ সংকেতেও আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না উপকূলবাসী
উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে ক্ষণে ক্ষণে কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে আকাশ। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন সংকেত পেয়েও আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছেন না উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার উপকূলের বাসিন্দাদের কেউ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি। তারা বলছেন আরও পরে যাবেন।
রোববার দুপুর ১টার দিকে বলেশ্বর নদীর রায়েন্দা বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাইকিং করে উপকূলবাসীকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। তবে দুপুর গড়ালেও বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।
বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দা সেতারা বেগম বলেন, এ ধরনের বিপদ সংকেত মাঝেমধ্যেই আসে, তাই এখন আর তেমন ভয় লাগে না। সবকিছু গুছিয়ে রেখেছি, যদি ঝড় আসে তখন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।
জাহানারা বেগম নামে আরেকজন বলেন, ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করে মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছে। শুনেছি ঘূর্ণিঝড়টি রাতে আসবে, তাই এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাইনি। বিকেলের দিকে যদি ঝড় বেশি দেখি তাহলে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাব।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য জালাল উদ্দিন রুমি বলেন, সংকেত পাওয়া মাত্র এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি সম্ভবত সন্ধ্যার দিকে আঘাত হানবে, এজন্য এলাকাবাসী একটু দেরি করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন। ঝড় শুরু হলে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোয় অবস্থান করব।
রায়েন্দা ফেরিঘাট এলাকায় অনিল নামে এক যুবককে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না কেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘বহুত চুবানি খাইছি, এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।’
শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন শান্ত বলেন, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমাদের উপজেলাটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় প্রতিটা ঘূর্ণিঝড়েই এখানকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। ঘূর্ণিঝড় রেমালে যাতে ক্ষয়ক্ষতি কম হয় সে লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। উপজেলায় মোট ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র পরিষ্কার করা হয়েছে। সকলে যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসে সেজন্য মাইকিং করা হচ্ছে। শুকনো খাবার, ওষুধ ও খাবার পানি মজুদ রাখা হয়েছে। আশা করি বিকেলের মধ্যে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে পারব।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় জেলায় মোট ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।সবাই যেন আশ্রয়কেন্দ্রে যায় সেজন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
শেখ আবু তালেব/আরকে