বিএনপির বলার ভাণ্ডার শূন্য হয়ে গেছে : নানক
রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির বলার ভাণ্ডার শূন্য হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, একটা রাজনৈতিক দল হিসেবে পেপার পত্রিকায় মিডিয়ায় তাদের উপস্থিত থাকা দরকার। সেকারণে তাদেরকে তো কিছু না কিছু বলতেই হবে। তাদের বলার ভাণ্ডার শূন্য হয়ে গেছে। তারা দিনক্ষণ তারিখ দিয়েছিল। তাদেরকে কোনো এক বিশ্ব মোড়লের প্রতিনিধিরা যা বলেছিল তাতে মনে হয়েছিল ৭ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। আসলে ক্ষমতার মালিক যে জনগণ, তারা তা বুঝতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে ‘বহুমুখী পাট পণ্য মেলা-২০২৪’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনদিনের এ মেলা শেষ হবে আগামী ২৫ মে। এতে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তারা অংশ নিয়েছেন।
বিএনপিকে ষড়যন্ত্র নির্ভর দল দাবি করে মন্ত্রী বলেন, সেনা আইনে সেনা ছাউনিতে যে রাজনৈতিক দল জন্ম নেয়, তারা কখনো জনগণের ওপর নির্ভরশীল না। তারা ষড়যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। তাদের কোনো ষড়যন্ত্র বাংলার জনগণ আর সফল হতে দিবে না।
পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোসহ প্যাকেজিং আইন কঠোরভাবে আরোপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, পাটের ব্যবহার, উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ানোর ব্যাপারে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। আমরা পাটকল মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছি। প্যাকেজিং বাড়ানো নিয়ে যথেষ্ট চেষ্টা রয়েছে আমাদের। পাটের বস্তার উৎপাদনও বাড়াতেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি তারা যেন পাটকল মালিক, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পাটজাত পণ্যসমূহ সরকারি দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, কোনো কুচক্রীয় মোড়লের চোখ রাঙানোর কাছে মাথা নত করার পর্যায়ে বাংলাদেশ আর নেই। পোশাক শিল্প যেভাবে বিশ্ববাজার দখল করেছে। ঠিক সেভাবে পাট ও চামড়াজাত শিল্পকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে সরকার। এছাড়াও পাট পণ্যের হারোনো গৌরবোজ্জ্বল ফেরাতে নানামুখী উদ্যোগের কথা জানান মন্ত্রী।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, পাট দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্ধ ছয়টি পাটকল চালু করেছেন। আমরা পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো চালু করার জন্য তাগিদ দিচ্ছি। আমরা সব বিষয়কে নিয়ে একটি পরিকল্পনা মাফিক রুটিন অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। পাটকল মালিকদের কোনো বকেয়া পাওনা নেই।
এর আগে মন্ত্রী রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রংপুর জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও পাট অধিদপ্তর, জেডিপিসি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে পাটখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
সেখানে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জন করতে হবে। আমরা সুন্দর একটি পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি, একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। এ জন্য পরিবেশকে দূষণ ও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে হবে। রাইসমিলার ভাইদের অনুরোধ করব, আপনারা শতভাগ পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করুন। সামগ্রিক বিবেচনায় আপনারা লাভবান হবেন। চালের সঙ্গে আপনারা বস্তার দামও পেয়ে যাবেন এবং পেয়ে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি পাটকল মালিকদের ৫০ কেজির বস্তা ছাড়াও ২৫-৩০ কেজির বস্তা উৎপাদনের জন্য তাগিদ দেন।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান বাবলু, রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার, সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত আসন) নাছিমা জামান ববি, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত আসন) অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অতিরিক্ত সচিব ও পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরা, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম প্রমুখ।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ