বিদ্যালয়ে ‘ভূত আতঙ্কে’ ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ
ফরিদপুরের নগরকান্দায় ‘সাদা কাফনে মোড়ানো গলা ছাড়া মানুষের দৌঁড়’ দেখে আতঙ্কে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার (১৯ মে) দুপুরে উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আকরামুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ৬ষ্ঠ শ্রেণি ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে ভূত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ গলা ছাড়া সাদা কাফনে মোড়ানো মানুষের দৌঁড় দেখতে পায়। এরপর একই বস্তু থেকে আগুনের ফুলকি দেখতে পায় কয়েকজন শিক্ষার্থী। বিষয়টি তারা একে অপরকে দেখালে একে একে ষষ্ঠ ও দশম শ্রেণির অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। স্থানীয় লোকজন স্কুলে ভিড় করে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) আসাদুজ্জামান শাকিল, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুর রহমান বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুব আলী মিঞা বিষয়টিকে গুজব বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে শিক্ষার্থীরা হয়তো চোখে ঝাপসা দেখেছে। এক শিক্ষার্থীর মুখ থেকে আরেক শিক্ষার্থীর মুখে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কে কয়েকজন মূর্ছা যায়।
নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সরকার বলেন, এ রকম ঘটনার খবর শুনে একটি মেডিকেল টিম বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সবাই এখন সুস্থ রয়েছে।
অতিরিক্ত গরমে শিক্ষার্থীদের এমন অবস্থা হয়েছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, প্রচণ্ড গরমে শিক্ষার্থীরা চোখে ঝাপসায় কিছু দেখে সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপরও বিষয়টি আরও গভীরভাবে তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত বোঝা যাবে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, ঘটনার পরই পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার পর পুরোটা সময় আমরা স্কুলেই ছিলাম। চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেই শিক্ষার্থীরা সুস্থ হয়ে যায়। এরপর এক শিক্ষার্থী বেশি অসুস্থ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তাকেসহ সবাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জহির হোসেন/আরএআর