জনসম্মুখে স্বামী-স্ত্রীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
যশোরের মনিরামপুরে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে স্বামী-স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ করে মধ্যেযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাত ৮টার দিকে উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের গাবুখালী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার (১৮মে) দুপুরে আহত স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তার স্বামী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
আহতরা হলেন- গাবুখালী গ্রামের শওকত গাজীর ছেলে ফারুক গাজী (৪৫) ও তার স্ত্রী সুমি বেগম (৩৪)। এ ঘটনায় আহত ফারুক গাজী পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মণিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।
অভিযুক্তরা হলেন, গাবুখালি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর দুই ছেলে বজলুর রহমান (৫০), নজরুল ইসলাম(৫৫), এবং নজরুল ইসলাম এর ছেলে হিল্লাল গাজী (৩৫), রোস্তম গাজীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩২) ও আনছার আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০)।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ফারুক গাজীর সঙ্গে অভিযুক্তদের জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল যা আদালতে বিচারধীন রয়েছে। গাবুখালী বাজারে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার সময় ফারুক গাজী ও তার স্ত্রী ডাক্তার দেখাতে আসলে বজলুর রহমানের নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ হয়ে দেশি অস্ত্র বাঁশের লাঠি নিয়ে ৫ থেকে ৭ জন ফারুক গাজীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফারুক গাজী মাথায় বাঁশ ও ধারালো রাম-দা দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তার স্ত্রী সুমি বেগম স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও সংঘবদ্ধভাবে বজলুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, তার পরনের কাপড় ছিড়ে ফেলে এবং মধ্যেযুগীয় কায়দায় ঘিরে রেখে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে বজলুর রহমান নির্যাতন করতে করতে সুমি বেগমের মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করলে সেও মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
সুমি বেগমের যা পলি বেগম এগিয়ে আসলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে অভিযুক্তরা এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি হয়।
আহত ফারুক গাজীর বলেন, বাজারে অনেক মানুষের মধ্যে জনসম্মুখে আমাকে আর আমার স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন করেছে অভিযুক্তরা। তারা খুবই ভয়ংকর। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। আমার মাথায় আটটি সেলাই লেগেছে। আমার স্ত্রীর অবস্থা আরও খারাপ। তাকেও সবাই ঘিরে রেখে অমানবিক মধ্যেযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে।
তিনি বলেন, আমি মনিরামপুর থানা পুলিশে অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশও কোন আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমি এই নির্মম নির্যাতনের বিচার চাই।
এ বিষয়ে মনিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ্যান্টনি দাস অপু/এমএএস