হারিছকে মোকাবিলায় মনিরকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ালেন মেরী
বরিশাল জেলার মধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত গৌরনদী উপজেলায় রাজনীতির নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) সকালে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী মনির হোসেনের প্রতি সমর্থন জানান সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রার্থী সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী। একই সঙ্গে মেরীকে মনির হোসেনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক করা হয়েছে।
মূলত গৌরনদী পৌরসভার পদ ছেড়ে আসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমানকে ঠেকাতে নিজের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মনিরুন নাহার মেরী।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই পাল্টাপাল্টি অবস্থানে উত্তপ্ত ছিল গৌরনদী উপজেলা। বিশেষ করে বরিশাল-১ আসনের অন্তর্গত এই উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বাড়ি। নেতাকর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে, হেভিওয়েট এই নেতার সবুজ সংকেতে মেয়র পদ ছেড়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এসেছেন হারিছুর রহমান।
বিপরীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন, সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী ও হারিছুর রহমানের ভাই হাবিবুর রহমান এককাট্টা হয়ে হারিছকে ঠেকাতে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। কিন্তু মনোনয়ন বাছাই পর্বে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায় হাবিবুর রহমানের। পরে মনিরুন্নাহার মেরী ও মনির হোসেন টিকে থাকলেও হারিছুর রহমানের বিরুদ্ধে কে লড়বেন সেই সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। তবে আজ সিদ্ধান্তে আসায় উপজেলার ভোটে নতুন হিসেব শুরু হলো।
গৌরনদী উপজেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও প্রার্থী সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী বলেন, আমরা যে তিনজন প্রার্থী একত্র হয়ে নির্বাচনের কথা বলেছিলাম, সেখানে সবার মত ছিল শেষ পর্যন্ত মাঠে একজন থাকব। এর মধ্যে মো. হাবিবুর রহমানের প্রার্থিতা বাছাইয়ে বাতিল হয়ে গেছে। আর এখন আমি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। তাই সবমিলিয়ে পূর্বের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মনির হোসেনকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছি।
সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরীর পূর্ণ সমর্থন পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বিষয়ে শতভাগ আত্মবিশ্বাসী কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী মো. মনির হোসেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বজায় থাকলে আমার জয়ের বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। আমার পক্ষে যারা প্রচারণায় নামছে তাদের এখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, হুমকি-ধামকি দিচ্ছে এবং বাধা-বিপত্তির সৃষ্টি করছে।
যদিও এসব অভিযোগ মানতে নারাজ মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হারিছুর রহমানের অনুসারী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
হারিছুর রহমানের সমর্থক ও গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. লুৎফর রহমান বলেন, কে কাকে সমর্থন দিয়েছে তা নিয়ে আমরা কিংবা আমাদের প্রার্থী উদ্বিগ্ন নয়। বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আমরা জেনেছি। মূল বিষয় হলো আমাদের প্রার্থী হারিছুর রহমানের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়ে অনেকে নামলেও সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় তিনি এগিয়ে আছেন। একজন প্রার্থী থাকলে আমাদের আরও সুবিধা হবে জয়ের বিষয়ে।
তিনি আরও বলেন, হারিছুর রহমানের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবে আর সেটা ফলাফলই বলে দেবে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমজেইউ