ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গরু ছিনতাইয়ের মামলা
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় পিকআপ ভর্তি গরু ছিনতাইয়ের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচটি গরু উদ্ধারসহ ১ ছিনতাইকারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয়রা।
গত মঙ্গলবার (১৪ মে) রাত সোয়া নয়টায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সাতমাইল (ঢাকা-সিলেট) মহাসড়কের খাঁজাকালু গ্রামের রাস্তার সামনে গরু ছিনতাইয়ের অভিযোগে বুধবার (১৫ মে) দক্ষিণ সুরমা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন সুনামগঞ্জের ছাতকের মন্ডলীভোগ এলাকার মৃত তাজ উদ্দিনের ছেলে গরু ব্যবসায়ী গৌঁছ উদ্দিন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার জালালপুর ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (২০), দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সিলাম গ্রামের ঠিকরপাড়ার মৃত মোবারক আলীর ছেলে সামসুদ্দোহা সাদি (২২), ছব্দলপুর গ্রামের মৃত নছব আলীর ছেলে খসরু মিয়া(৩৬), একই থানার লিটন (২৭), রনি (২৭), মুন্না (৩০), সেবুল (৩০) ও কোতোয়ালি থানার জল্লারপাড় এলাকার জেবু (২৫)। এর মধ্যে মো. বোরহান উদ্দিনকে (২০) গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে সুনামগঞ্জের ছাতক থানার মন্ডলীভোগ এলাকার মৃত তাজ উদ্দিনের ছেলে গরু ব্যবসায়ী গৌঁছ উদ্দিন একটি পিকআপে ৫টি গরু সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে জগন্নাথপুর নিয়ে যাচ্ছিলেন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার (ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে) খাজাকালু গ্রামের রাস্তার সামনে পৌঁছামাত্র তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশা (সিএনজি) যোগে ছিনতাইকারীরা তার গাড়িটি ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে তারা পিকআপ নিয়ে জালালপুর রোডের দিকে চলে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে দক্ষিণ সুরমা থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা গাড়ির জিপিএস ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে গাড়িটির অবস্থান শনাক্ত করে।
এরপর মোগলাবাজার থানা পুলিশের সহযোগিতায় জালালপুর ইউনিয়নের ছব্দলপুর থেকে ছিনতাইকারী মো. বোরহান উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য থেকে পাঁচটি গরু উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নোমান আহমদ লাকি বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে আমি অবগত। ঘটনার সত্যতা জেনে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা নেতৃবৃন্দকে জানানো হবে।
বিষয়টি নিয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাহুল দেবনাথ জানান, মামলায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার চেষ্টার পাশাপাশি তদন্ত অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর দক্ষিণ সুরমা কলেজে ছুরিকাঘাতে নিহত আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সামসুদ্দোহা সাদি। ওই মামলায় ২৬ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর দীর্ঘদিন জেলে থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
মাসুদ আহমদ রনি/এমএএস