কুমিল্লায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৫
কুমিল্লায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকারী পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত পুলিশের বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, কুমিল্লা নগরীর ২য় মুরাদপুর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমন ও একই এলাকার মৃত সেলিম মিয়ার ছেলে সুজন, নগরীর উত্তর চর্থা এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. রাকিব হোসেন ও কুমিল্লা শহরতলীর চাঁনপুর গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে রাহিদুল ইসলাম মাহি।
রোববার (১২ মে) দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সম্প্রতি কুমিল্লা নগরীর কয়েকটি স্থানে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে একটি ঘটনায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করা হয়। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিল।
ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের ব্যবহৃত পোশাক, হাতকড়া, জুতা, অস্ত্র ও গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার ছিনতাইকারী চক্রটি কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেলযোগে এসে পথচারীদেরকে পুলিশ পরিচয়ে হ্যান্ডকাপ ও অস্ত্রশস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই করত। পরে বৃহস্পতিবার (৯ মে) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের অভিযানে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মূলহোতা সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেওয়া তথ্য মতে তার সহযোগী সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে, একটি পাইপগান, ২টি কার্তুজ, একটি রামদা এবং ওয়ারড্রবের ভেতর থেকে ছিনতাইকৃত একটি বার আনা ওজনের স্বর্ণের চুড়ি, বিভিন্ন তালার ১১০টি চাবি, হাইওয়ে পুলিশের ডিপ সাইন সংযুক্ত ২ সেট পোশাক ও বিডি পুলিশের কেডস জুতা এক জোড়া, একটি হ্যান্ডকাপ, ছিনতাইকৃত মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগ ১০টি, ২টি মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর কম্পিউটারে কম্পোজকৃত লেমিনিটিং করা এবং তার ভাড়া বাসার উঠানের পাশে রাখা একটি হেলমেটসহ একটি পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল, একটি র্যাপ রোড মাস্টার মোটরসাইকেল, একটি পালসার ১৫০ সিসিমোটর সাইকেল, একটি পিকআপ গাড়ি, একটি তালা কাটার, স্টিলের কভার সহ ২টি চাকু, একটি এসএস স্টিলের হাতলযুক্ত দ্বিফলা কুড়াল, ৫টি কাঠের হাতলযুক্ত হাতুড়ী, ৩টি বিভিন্ন সাইজের সেলাই রেঞ্জ এবং ছিনতাইকৃত ১১টি ব্যাক প্যাক ও ১০টি মানি ব্যাগ, একটি সুইচ গিয়ার চাকু, ছিনতাইকৃত ৫টি মহিলাদের পার্সব্যাগ এবং ছিনতাই পরবর্তী ভাগে পাওয়া ১২ হাজার ৭৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আরেকটি ছিনতাইকারীর দল নগরীর ঠাকুরপাড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা যাত্রী এক মহিলার কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ছিনতাই করে। পরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার (১১ মে) রাতে অটোরিকশাচালক মো. রাকিব হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে চালকের দেওয়া তথ্যমতে অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত সিএনজি একটি, এক ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্ণ, একটি দেশীয় এলজি, ২ রাউন্ড কার্তুজ, একটি আইফোন, একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় নতুন করে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান, কুমিল্লা সদর সার্কেল কামরান হোসেন, কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রাজেশ বড়ুয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মংনে থোয়াই মারমা প্রমুখ।
আরিফ আজগর/আরকে