১২ শিক্ষকের দুই শিক্ষার্থী, পাস করেনি কেউ
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় একমাত্র বিদ্যালয় হিসেবে শতভাগ অকৃতকার্যের তালিকায় রয়েছে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ১২ জন শিক্ষকের এ বিদ্যালয়টি থেকে মাত্র দুজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারি অনুদানের জন্য আবেদন করলেও বিদ্যালয়টি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি।
তবে শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু পরিবারের নামে হওয়ায় বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের জন্য ২০২১ সালের অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন পায়। যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ ১২ জন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারী রয়েছেন। বিদ্যালয়টি একাডেমিক স্বীকৃতি পায় ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে। তবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানাতে পারেননি শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা বলছেন, বিদ্যালয়টি বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে। মাঝে মধ্যে দু-একজন শিক্ষক-কর্মচারী আসলেও শিক্ষার্থীর দেখা মেলে না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিদ্যালয়ে এবার কেউ পাশ করতে পারেনি। এতে আমাদের এলাকার নাম খারাপ হচ্ছে। এখানে শিক্ষকরা তো প্রত্যেকদিন আসে ঠিকমতো ক্লাস নেয় কিনা সেটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেখা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার হাবিব সরকারের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার বাড়িতে গেলেও এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী কতজন ছিলেন এটা তার জানা নেই। বিষয়টি জেনে পরে জানাবেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলায় মাত্র একটি বিদ্যালয়ে ফলাফলের শতকরা হার শূন্য। এবার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দুজন পরীক্ষা দিয়েও কেউ পাস করতে পারেনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেন, এ বিদ্যালয়ে কেউ পাস করতে পারেনি বিষয়টি দুঃখজনক। এখানে শিক্ষার্থী এত কম আর কেউ পাস করতে পারেনি কেন বিষয়টি দেখা হবে।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর