পাবনায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর মুক্তির দাবিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ
পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিয়মবহির্ভূতভাবে টাকা বিতরণকালে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ আটক ১১ জনের মুক্তির দাবিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ করছে তার সমর্থকরা।
মঙ্গলবার (৭ মে) ভোররাত থেকে কয়েকশ সমর্থক সুজানগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। বেলা ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় তারা থানার সামনেই ছিলেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহীনকে দ্রুত মুক্তি না দেওয়া হলে রাজপথ থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে শাহিনুজ্জামান শাহীনের মুক্তির দাবিতে সুজানগর পৌরসভার সব রাস্তাঘাট কাঠের গুঁড়ি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরাঁও বন্ধ রাখা হয়েছে।
সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদাউস আলম ফিরোজ বলেন, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়টি সুজানগরবাসী কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। একটি মহল নিজেদের পরাজয় জেনে এমন ষড়যন্ত্র করছে। তবে ষড়যন্ত্র করেও বিজয় ঠেকাতে পারবে না। এজন্য উপজেলা সর্বস্তরের মানুষজন রাজপথে নেমে আসছে। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মুক্ত না করে আমরা ঘরে ফিরব না। অতি দ্রুত তাকে মুক্তি দিতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সুজানগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও শাহীনুজ্জামানের ভাই সরদার রাজু আহমেদ বলেন, প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসাতে এই নীলনকশা করেছে। অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। মুক্তি না দেওয়া হলে সুজানগর উপজেলাকে অচল করে দেওয়া হবে। রাজপথ থেকে নেতাকর্মীরা সরবে না।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। কয়েকশ মানুষ থানার সামনের রাস্তায় শুয়ে আছেন, বিক্ষোভ ও অবরোধ করছেন। তাদের শান্ত করে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৬ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুজানগরের চর ভবানীপুরের নির্বাচনী এলাকা থেকে ভোটারদের মধ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে টাকা বিতরণকালে প্রায় ২৩ লাখ টাকাসহ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ ১১ জনকে আটক করে র্যাব। পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহীনের ব্যবহৃত একটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে আগামীকাল বুধবার (৮ মে) সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওহাব (মোটরসাইকেল) এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিনুজ্জামান প্রতিদ্বন্দ্বিতা (আনারস) করছেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, পদ্মা নদীর বালুমহাল দখলসহ নানা বিষয় নিয়ে দুজনের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুজনের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হুমকির অভিযোগ তুলছেন। গত ২৩ এপ্রিল ও ২ মে সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত সাতজন আহত হন।
রাকিব হাসনাত/এমজেইউ