মধুখালীর নিহত দুই ভাইয়ের পরিবারের পাশে বিএনপি
ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লিতে গত ১৮ এপ্রিল রাতে মন্দিরে প্রতিমায় আগুন দেওয়ার অভিযোগে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা তদন্তে নেমেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। বুধবার (১ মে) সাড়ে ১২টার দিকে নিহত দুই ভাইয়ের বাড়ি উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামে যান তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
এ সময় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও তদন্ত কমিটির সদস্য বিজন কান্তি সরকার, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু উপস্থিত ছিলেন।
নিহত দুই ভাই হলেন- নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের শাহাজাহান খানের ছেলে আশরাফুল ও আসাদুল। তারা নির্মাণশ্রমিক ছিলেন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, এ রকম ন্যাক্কারজনক ঘটনায় খবর পাওয়া মাত্রই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার নেতৃত্বে আমরা আজকে মধুখালীতে এসেছি। এ রকম ঘটনার বিচার দাবি করি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দেশ। এ দেশের অধিবাসীদের ধর্মীয় বিশ্বাসে বৈচিত্র্য থাকলেও আবহমানকাল থেকেই নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান। এখানে কোনো বিবেধ সৃষ্টি করা যাবে না।
এ সময় বিএনপি নেতারা নিহতের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমবেদনা জানান। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নিহতদের বাবা-মায়ের হাতে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করেন।
নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নিয়ে এখানে আসিনি। ডুমাইনের পঞ্চপল্লীতে শ্রমিকদের যে পাশবিক কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়, এ রকম ঘটনার যেন বাংলাদেশে আর জন্ম না হয়। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িতদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে শাস্তির দাবি জানাতে এসেছি। নিহতদের পরিবারের যে কোনো আইনি সহায়তায় বিএনপি পাশে থাকবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার, যুবদলের সহ-আইন সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী ও ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জয়দেব কুমারসহ ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়াসহ জেলা ও মধুখালী উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি কালি মন্দিরের প্রতিমায় আগুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই বিদ্যালয়ে নির্মাণ কাজ করা ৭ শ্রমিককে স্কুলের একটি কক্ষে নিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় দুই সহোদর মারা যান। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মধুখালী থানায় হত্যা, প্রতিমায় আগুন ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জহির হোসেন/আরএআর