দাবদাহে বেড়েছে লোডশেডিং, গরম থেকে বাঁচতে হাতপাখায় ভরসা
সারাদেশে টানা তাপপ্রবাহে বিপাকে পড়েছে মানুষ। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। গরমে টাঙ্গাইলে লোডশেডিংয়ের কারণে শ্রেণিকক্ষের পাখা ঘুরছে না। ফলে, তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থীরা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছে। অনেকের সঙ্গে পাখা না থাকায় তারা বই-খাতা দিয়েই বাতাস দেওয়ার চেষ্টা করছে। সরেজমিনে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা শরিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে আনা টিফিনের খাবার গরমের কারণে মাঠে গাছের নিচে বসে খাচ্ছে। এ ছাড়া দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থীদের জন্য এক ঘণ্টা পরপর বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শুধু ফলদার শরিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ই নয় জেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থা একই। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের গরম থেকে বাচঁতে ভরসা হাতপাখা ও পড়ার বই।
সোমবার দুপুরে ফলদা শরিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস বিরতিকালীন সময়ে ক্লাসরুমে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার মিরা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
বিদ্যালয়টির ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী জিয়াসমিন জানায়, সকালের দিকে রোদ কম থাকলেও গরম থাকে। রোদের মধ্যেই স্কুলে আসতে হয়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে গরম থেকে বাঁচতে তারা হাতপাখা ব্যবহার করেন। অনেকেই আবার পাখা না থাকায় পড়ার বই দিয়েই বাতাস দেয় শরীরে।
ফারজানা খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বাইরে বাতাস নেই। শ্রেণিকক্ষেও অনেক গরম। এরমধ্যে বিদ্যুৎ থাকে না। তীব্র গরমের মধ্যেই ক্লাস করতে হয়। আমাদের এক সহপাঠী গরমে অসুস্থ হয়ে গিয়েছির।
ফলদা শরিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সরকারের নির্দেশে বিদ্যালয় খোলা রেখে পাঠদান করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে শিক্ষার্থীদের পড়ানোটাও অনেক কষ্টের। গরমে একটা ক্লাস নেওয়ার পর পরের ক্লাস নেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
ফলদা শরিফুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার দত্ত বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নাভিশ্বাস অবস্থা। গরমে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সোমবার ৬ষ্ঠ শ্রেণির একজন ছাত্রীকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, গরমের কারণে বিদ্যালয়ে যাতে অ্যাসেম্বলি না করা হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশ মেনেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখা হয়েছে। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি মঙ্গলবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে।
অভিজিৎ ঘোষ/এএএ