কেজিতে বিক্রি হওয়ায় ক্রেতার নাগালের বাইরে তরমুজ
রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে হঠাৎ কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করা শুরু হয়েছে। ফলে অসাধু বিক্রেতারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে ক্রেতারা ৮০ টাকার প্রতি পিস তরমুজ কেজি দরে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিগত বছরগুলোতে উপজেলার সর্বত্রই তরমুজের পিস হিসেবে বিক্রি করতে দেখা গেছে। চলতি মৌসুমে বাজারে তরমুজের পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বেও এ বছর তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রোজার আগে যেই তরমুজ প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে সেই তরমুজ রোজার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
আগে ৫ কেজির একটি তরমুজের দাম ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ এখন ৫ কেজির একটি তরমুজ কিনতে গুনতে হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মতো।
রাজবাড়ী সদরের মধ্যে রাজবাড়ীবাজার, নতুনবাজার, শ্রীপুরবাজার, দাদশীবাজার, আহলাদিপুরবাজার, মাটিপাড়াবাজার, বাগমারা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।
অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সঙ্গে দাম নিয়ে দর কষাকষি করছেন। একপর্যায়ে তারা বিবাদেও জড়িয়ে পড়ছেন। যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই অনেক ক্রেতা কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছে দোকানির কাছে; এ নিয়েও চলছে বাগবিতণ্ডা।
নতুনবাজর থেকে রিকশাচালক আজিজ মণ্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, একে তো লকডাউন চলছে, পুলিশ রাস্তায় বের হতে দিচ্ছে না, তারপরও পেটের দায়ে বের হতে হয়েছি। দিন শেষে যা আয় হচ্ছে তা দিয়ে কোনোরকম চলে যাচ্ছে। এই সীমিত আয় দিয়ে এ বছর তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না।
রজবাড়ীবাজারে তরমুজ কিনতে আসা বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা সেলিম শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। অতিরিক্ত দামের কারণে তরমুজ কিনতে না পেরে ফিরে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বাজারে প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই অব্যবস্থাপনা। আমার মতো আরও অনেকে তরমুজ কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী জানান, বড় বড় আড়ৎদাররা পাইকারিবাজার থেকে তরমুজ শ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। আমরাও কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজার মনিটরিং করলে কেজিকাহিনী উন্মোচন হবে বলে তারা মনে করছেন।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম জানান, বছরখানেক আগেও তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি হতো। কিন্তু ইদানিং বাজার মনিটরিংয়ের অভাবের কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে তরমুজ কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যদিও এই তরমুজ কৃষকদের কাছ থেকে তারা শ হিসেবে কিনে নিয়ে আসে। এখনো ক্রেতাদের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে শিগগির ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মীর সামসুজ্জামান/এমএসআর