সভাপতির বাসকে জরিমানা করায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতির মালিকানাধীন বাসে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছে বাস শ্রমিকরা। এতে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় অচল হয়ে পড়ে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন গোল চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা। যদিও প্রশাসনের অনড় অবস্থানে শেষ পর্যন্ত জরিমানা দিয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম নুরুল আখতার নিলয় বলেন, পটুয়াখালী থেকে বেশ কয়েকটি বাস অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করেছিল। বাস টার্মিনাল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি বাসকে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুসারে জরিমানা করি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি উল্লেখ করে তিন আরও বলেন, জরিমানার পরবর্তী ঘটনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কথা বলবেন। আমি ওই বিষয়ে কথা বলতে চাই না।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, পটুয়াখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে বরিশালগামী সবগুলো বাস অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়ছিল। এমনকি ছাদেও যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে ৪/৫টি বাসকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে রুদ্র-তূর্য নামে পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধার একটি বাস ছিল। তার বাসকে জরিমানা করার পরপরই শ্রমিকরা বাস টার্মিনালের ভেতরে ও সড়কে রাখা বাসগুলো মহাসড়কে আড়াআড়িভাবে রেখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদ জানায়। দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা এভাবে বাসগুলো রেখে দেয়।
জানা গেছে, আন্দোলনের ডাক দেওয়া শ্রমিক ও জেলা প্রশাসনের মধ্যকার বৈঠকের পরে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পটুয়াখালী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের সময় হওয়ায় যাত্রী চাপ বেশি। সে কারণে কিছু বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী যাচ্ছে। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সকাল থেকে প্রতিটি গাড়িকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করছেন। এখানকার তিনটি গাড়িকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। আরেকটি গাড়িকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। তবে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।
রুদ্র-তূর্য বাসটি তার মালিকানাধীন বলে স্বীকার করেন পটুয়াখালী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মৃধা।
পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের দায়ে জরিমানা করায় বাস শ্রমিকরা সড়কে বাস রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সড়ক যানজটমুক্ত করে দিই। বর্তমানে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করায় একটি বাসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে কেউ কেউ সড়কে বাস রেখে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তবে পরবর্তীতে জরিমানা দিয়ে বাসগুলো সরিয়ে নেন শ্রমিকরা। বর্তমানে মহাসড়কে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমজেইউ