দুই মহাসড়কে যানজট নেই, তবে গাড়ির চাপ বাড়ছে
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই বেড়েছে গাড়ির চাপ। এতে চন্দ্রার আশপাশে কিছু সময়ের জন্য যানজট দেখা দিলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়াই ঈদে ঘরমুখো মানুষদের নির্বিঘ্নে চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে বিকেলের দিকে পরিস্থিতি ভিন্ন আকার ধারণ করতে পারে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।
রোববার বেলা ১১টার দিকে চন্দ্রায় গিয়ে দেখা যায়, গাবতলী, আশুলিয়া, বাইপাইল, সাভার ও নবীনগর এলাকা থেকে আসা বাস চন্দ্রা এলাকা পাড় হয়ে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে। এসময় যাত্রীর জন্য অপেক্ষমান বাসের কারণে সামান্য যানজট ও ধীর গতি তৈরি হলেও তা অল্প সময়ের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজধানীর আব্দুল্লাহ্পুর, টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, কলেজ গেট, গাজীপুর চৌরাস্তা, চান্দনা চৌরাস্তা, সালনা, পোড়াবাড়ি, রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা, হোতাপাড়া, মেম্বারবাড়ি, বাঘেরবাজার, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, আনসার রোড, মাওনা চৌরাস্তা, এমসি বাজার, নয়নপুর ও জৈনাবাজারসহ মহাসড়কের পুরো অংশ জুড়ে যানজট নেই বললেই চলে। তবে বাসগুলো যাত্রী ওঠানো ও নামানোর সময় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকেলের দিকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। ইতোমধ্যে দুটি মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী ইসলাম পরিবহনের চালক আরশেদ হোসেন বলেন, মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ থাকলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি রয়েছে।
উত্তরবঙ্গগামী আদিল আবির পরিবহনের যাত্রী আল আমিন বলেন, চন্দ্রায় যানজট নেই সেটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। ঈদে চন্দ্রায় যানজট থাকে, অতিরিক্ত ভাড়ার হাকডাক থাকে তবে এবার পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।
পরিবার নিয়ে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক। তিনি বলেন, যাত্রীরা কাউন্টারে এসে অপেক্ষা করলেও বাসগুলো কাউন্টারের সামনে না দাঁড়িয়ে অনেক দূরে গিয়ে দাঁড়ায়। ফলে হেঁটে গিয়ে বাসে উঠতে হয়। যদি প্রতিটি কাউন্টারের সামনে নির্দিষ্ট জায়গাতে বাস দাঁড়াত তাহলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। একটি টিম মোড়ে মোড়ে যানজট নিরসনে কাজ করছে। আরেকটি টিম মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি নিয়ন্ত্রণসহ যাত্রীদের চলাচলে সহযোগিতা করছে। সব মিলিয়ে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব পিপিএম বলেন, চন্দ্রা কেন্দ্রিক তিন শিফটে ভাগ হয়ে পুলিশ কাজ করছে। এর মধ্যে ৫৯৭ জন পুলিশ সদস্য ট্রাফিক সামলাচ্ছে। এছাড়া থানা পুলিশসহ এক হাজারের ওপরে পুলিশ সদস্য চন্দ্রার দিকে মোতায়েন রয়েছে। মোড়ের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় বিনা কারণে কোনো যানবাহনকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, এবারের ঈদযাত্রা অন্যান্য বারের ঈদ যাত্রার চাইতে স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে। এবার চান্দনা চৌরাস্তা ও ভোগড়া এলাকায় দুটি উড়াল সড়কসহ টঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সাতটি ফ্লাইওভার চালু হয়েছে। আশা করছি ভোগান্তি ছাড়া সবার ঈদযাত্রা শেষ হবে। মহাসড়কে যানবাহন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে যানবাহন বিকল হলে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া যায়।
শিহাব খান/আরকে