আ.লীগ অতীতে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও আজ ধ্বংস করছে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। প্রায় ৬০ লাখ নিরপরাধ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়েছে। কারাগারে দিনের মধ্যে নিয়ে গেছে ৩০ হাজার মানুষকে। এভাবে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অসাংবিধানিকভাবে ব্যবহার করে বাংলাদেশের জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সেটি ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু তারা আন্দোলন দমিয়ে রাখতে পারেনি, আজকের সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি তার প্রমাণ।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও আজ তাদের হাতে গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে। তারা ৭৫-এ বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে ধুলিস্যাৎ করতে চেয়েছিল, কিন্তু তখন পারেনি। এখন ভিন্ন কৌশলে ছদ্মবেশে আবার সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে মরিয়া হচ্ছে।
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ১৭০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বানিয়েছেন। এরপরও নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগ এভাবে সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২৮ অক্টোবর যে স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন, সেদিন সমস্ত বাংলাদেশের মানুষ একত্রিত হয়েছিল। ওই সময় আমাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে, আয়োজন পণ্ড করতে তাদের (আওয়ামী লীগ) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছিল। তারা আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে, টিয়াশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। আমরা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। এসবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এ দেশের গণতন্ত্রের কবর রচনা করতে চেয়েছিল। বর্তমানে এ ভয়াবহ দানব সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে গিলে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, এ অবৈধ সরকার যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, যাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই তাদের যদি ক্ষমতায় আরও থাকতে দেওয়া হয় তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে বাংলাদেশের। বর্তমানে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে সেই সংগ্রামকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য আমরা আন্দোলন করছি না, আমরা আন্দোলন করছি ভোটের অধিকার, অন্নের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার এবং কথা বলার অধিকারের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের ওপর সরকারি লোকেরা চেপে বসেছে, যেন তারা খবর লিখতে না পারে। এ দেশে এখন কথা কইতে মানা, বলতে মানা এমন অবস্থা সৃষ্টি করেছে। আন্দোলন এবং সংগ্রামের মাধ্যমে এ অবৈধ সরকারকে আমরা পরাজিত করবো। বাংলাদেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব আমাদের গণতন্ত্রকে সমর্থন করে।
ঠাকুরগাঁও সদর বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মামুন-উর-রশিদ প্রমুখ।
এর আগে ২৮ অক্টোবরের বিভিন্ন মামলায় কারামুক্ত দলীয় নেতাকর্মীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরিফ হাসান/এমজেইউ