থানাকে না জানিয়ে আসামিকে তুলে আনায় এএসআই সাসপেন্ড
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে থানায় তথ্য না দিয়ে সিভিল পোশাকে এক যুবককে তুলে আনার ঘটনায় পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলামকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে সহকারী পুলিশ সুপার রামগতি সার্কেল সাইফুল আলম চৌধুরী ও কমলনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল জলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রাম থেকে আলমগীর হোসেন নামে এক যুবককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৪-৫ জন লোক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগে তুলে আনার অভিযোগ উঠে। আলমগীর একই এলাকার কালামিয়া সর্দারের ছেলে ও পেশায় কৃষক।
আলমগীরের স্ত্রী শাহিদা বেগম সাংবাদিকদের জানায়, তুলে নেওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পর আলমগীরের মোবাইল ফোন থেকে তাকে কল করা হয়। মোবাইল ফোনে যিনি কথা বলছিলেন তিনি তার কাছ থেকে আলমগীরকে ছেড়ে দিতে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। আর ওই টাকা নিয়ে কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট-লরেন্স সড়কের পাশে যাওয়ার জন্য বলেন। নিরুপায় হয়ে তিনি স্বামীকে বাঁচাতে টাকা নিয়ে স্থানীয় মেম্বারসহ কয়েকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থল যান। তখন পরিচয় জানতে চাইলে তাদের সঙ্গে পুলিশের সোর্সদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম তাকে পুলিশ দাবি করেন। তিনি কমলনগর থানার এএসআই বলে পরিচয় দেন।
আরও পড়ুন
চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনার দিন আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি পরিচয় দেননি। টাকা নিয়ে দ্রুত তার কাছে যাওয়ার জন্য বলে। পরে আমি আমাদের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাই। আমাদের ওসি বিষয়টি কমলনগর থানার ওসিকে জনিয়েছেন। আমিনুল কমলনগর থানার পুলিশ হয়ে রামগতিতে ঢুকে মুখ বেঁধে আলমগীরকে নিয়ে যায়। আলমগীর একসময় গাঁজা সেবন করতো। তখন তার বিরুদ্ধে ২-১টি মামলা রয়েছে। এখন সে ভালো হয়ে গেছে। আলমগীর কৃষি কাজ করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে এএসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারি আলমগীরের কাছে গাঁজা বিক্রি করছিল। এতে তাকে আটক করে নিয়ে আসি। কমলনগরের ফজুমিয়ার হাট এলাকায় তার আত্মীয়-স্বজন এসে আমাদের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আমার হ্যান্ডক্যাপ, মানিব্যাগ নিয়ে গেছে তারা। আমি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।
কমলনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল জলিল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এএসআই আমিনুল থানায় কোনো ধরনের তথ্য না দিয়েই সিভিল পোশাকে একজনকে আটক করেন। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিক তাকে সাসপেন্ড করেছেন।
সহকারী পুলিশ সুপার রামগতি সার্কেল সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, আমি চট্টগ্রাম আছি। আমি লক্ষ্মীপুর থাকাকালীন আমিনুলকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে সাসপেন্ড করার কথা ছিল। পরে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর না থাকায় আমি চিঠিটি পাইনি।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরকে