অবৈধভাবে পুকুর খনন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মৃত্যু

পাবনার ঈশ্বরদীতে জমি থেকে এস্কেভেটর দিয়ে অবৈধভাবে পুকুর খননের সময় বৈদ্যুতিক লাইনে শর্ট লেগে শামীম হোসেন ছানু (৪৫) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরের দিকে উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের কালিকাপুরে ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল ইসলাম রবুর মাটির খাদে এ ঘটনা ঘটে।
শামীম হোসেন ছানু উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত মো. আবুল মুন্সীর ছেলে। তিনি দাশুড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, কয়েক দিন ধরে পুকুরে মাটি কাটার কাজ করছিলেন রবু মেম্বার। এ সময় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা হওয়ায় পানি সেচ দিতে যায় শামীম হোসেন ছানু। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি। স্থানীয়রা সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুকুর সংস্কারের জন্য এস্কেভেটর দিয়ে পুকুর সংস্কারের কাজ করা হচ্ছিল। প্রতিদিনের মতো আজকেও শামীম পুকুরের পানি সেচের জন্য ইলেকট্রিক সেচ পাম্প লাগায়। পরে সেচ পাম্পে ত্রুটি দেখে নিজেই ইলেকট্রিক তারে হাত দেয়। তারটি লিক থাকায় শর্ট সার্কিট হয়ে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায় এক মাস ধরে অন্তত দশ বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন করার কাজ করছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম রবু মেম্বার। স্থানীয়রা পুকুর খননে বাধা দিতে গেলে নানা রকমের হুমকি ধামকি ও মারধর করা হয়।
সেলিম হোসেন নামের স্থানীয় একজন জানান, রবু মেম্বারের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। তিনি মেম্বার হওয়ার পর থেকে এলাকা জুড়ে তাণ্ডব চালায়। সকল প্রকার অবৈধ কার্যকলাপে লিপ্ত তিনি। গত এক মাস ধরে তিনি কৃষি জমি নষ্ট করে মাটি খনন করছেন। এতে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, রফিকুল ইসলাম রবু মেম্বার একজন সন্ত্রাসী। কয়েক বছর আগে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে গিয়ে পাবনা সদর উপজেলার টেবুনিয়াতে তাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয় কয়েকজন লোক। তাতেও তার কার্যক্রম কমেনি। মেম্বার হওয়ার পর থেকে তিনি আরও তৎপরতা বাড়িয়ে দেন।
এ বিষয়ে সোহেল রানা নামের এক যুবক বলেন, রফিকুল ইসলাম রবু মেম্বার পুকুর খনন করেই চলেন। পুলিশ আসলে পালিয়ে যায় সবাই। আবার চুরি করে মাটি উত্তোলন করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে রফিকুল ইসলাম রবু মেম্বার বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম মাত্র উঠে শুনে দেখি একজন মারা গেছে। এ ঘটনায় কারো কোনো হাত নেই। এটি একটি অপমৃত্যু।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হবে এটা পূর্ব পরিকল্পিত হত্যা নাকি অপমৃত্যু।
রাকিব হাসনাত/এএএ