নতুন রেললাইনে লাইনচ্যুত হয় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস
বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব রেলস্টেশন থেকে নতুন হওয়া রেললাইন ব্যবহার করে ঢাকার দিকে যেতে হয় সবগুলো ট্রেনকে। সিগনাল মেনেই স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু নতুন লাইন আর লাইনের ম্যানুয়াল রেলক্রসিং পয়েন্স (মেইনপয়েন্স) করার সময় ট্রেনের মাঝখানের ‘চ’ বগি লাইনচ্যুত হয়।
সোমবার (১৮ মার্চ) রাত ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব স্ট্রেশনে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। এতে দুইশ মিটার নতুন রেললাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শুধু তাই নয়, রেললাইনে লাগানো ক্লিপগুলোও খুলে গেছে।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব স্টেশন বর্ধিতকরণ কাজ চলছে। এর ফলে রেলস্টেশনে একটি মাত্র রেললাইন সচল রয়েছে। মূলত ম্যানুয়াল রেললাইন ব্যবহার করে ট্রেনগুলো চলাচল করছে।
আরও পড়ুন
সরেজমিন দেখা যায়, দুর্ঘটনার পর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটির লাইনচ্যুত বগি রেল প্রকল্পের ক্রেনের সহায়তায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ বগিটি ব্যতিত বাকি বগিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ‘চ’ বগির সামনে থাকা বগিগুলো টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনে এবং পিছনের বগিগুলো সেতুপশ্চিম রেলস্টেশনে রিলিফ ট্রেনের সহায়তায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন রেললাইন প্রকল্পের দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, নতুন রেললাইনের রেলক্রসিং পয়েন্স (মেইনপয়েন্স) করার সময় ট্রেনের মাঝখানের বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে রেললাইনের প্রায় ২০০ মিটার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া রেলের ক্লিপ ভেঙে গেছে।
ট্রেনটি লাইনচ্যুত হওয়ায় মধ্যরাতে বিপাকে পড়েছেন অনেক যাত্রী। বিশেষ করে মঙ্গলবার সকালে জেল পুলিশের (কারারক্ষী) মাঠ পরীক্ষা থাকায় বহু চাকরিপ্রার্থী বিপাকে পড়েছেন। এসব চাকরিপ্রার্থীদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ দেখা গেছে।
রনি নামে এক যাত্রী বলেন, সকালে ঢাকায় কারারক্ষী চাকরির জন্য মাঠ পরীক্ষা রয়েছে। এখন কীভাবে সেখানে যোগদান করব? এতো রাতে বাসও কোথায় পাব? সারারাত স্টেশনেই কাটাতে হবে। আর এখনও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়নি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এক যাত্রী বলেন, ট্রেনের ‘চ’ বগিতে ছিলাম। সেই বগিটিই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। প্রথমে মনে হয়েছিল হয়ত আগুন লেগেছে ট্রেনে। ভয়ে সবাই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। নেমে দেখি টেনের চাকা পড়ে গেছে লাইন থেকে। এখন এত রাতে কীভাবে ঢাকায় পৌঁছাব, সেই টেনশনে আছি।
যাত্রীরা জানান, এতো রাতে কোথায় যাব? বাসও পাইনি। বাধ্য হয়ে রেলস্টেশনে বসে থাকতে হচ্ছে। কখন উদ্ধার কাজ শেষ হবে, কখন ট্রেন চালু হবে, বুঝতে পারছি না।
বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব স্টেশন মাস্টার খায়রুল ইসলাম বলেন, ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্থ বগিটি উদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে। রেল প্রকল্পের ক্রেন ব্যবহার করে বগিটি রেললাইনে তোলা হচ্ছে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বগি উদ্ধার কাজ শেষ করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কী কারণে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে, সেটা এখনো সঠিক করে জানা যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এমজে