সিগারেট খাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে স্কুলছাত্রকে হত্যার পর গুম
সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে বগুড়ায় স্বজনদের হাতে স্কুলছাত্র নাছিরুল ইসলাম নাছিম খুন হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। নিখোঁজের আট দিন পর গতকাল সোমবার (৪ মার্চ) রাতে গাবতলীর নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর গ্রামে ফুপুর বাড়ির মুরগির ঘরের মেঝে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে স্কুলছাত্র নাছিম হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানান বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ।
হত্যা ও মরদেহ গুমের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন- ঈশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক (২০) এবং সারিয়াকান্দির ফুলবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ ইসলাম (১৯)। এর মধ্যে এনামুল নাছিমের ফুফাতো ভাই এবং ফিরোজ সম্পর্কে চাচা হন।
আর নিহত নাছিম সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ওয়েজেল মণ্ডলের ছেলে। সে ফুলবাড়ী গমির উদ্দিন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় নাছিম। পরদিন ওই ঘটনায় তার বাবা সারিয়াকান্দি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ জানান, সিগারেট খাওয়া নিয়ে বেশ কয়েকদিন আগে নাছিমের সঙ্গে এনামুলের বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় নাছিমকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন এনামুল। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কৌশলে নাছিমকে ডেকে নেন এনামুল। নাছিম এলে ঈশ্বরপুর গ্রামের নিজ বাড়ির পাশের রাস্তার ওপর নাছিমের হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন নাছিমের চাচা ফিরোজ। কিন্তু তখন চিৎকার করলে তারা দুজন নাছিমের গলা ও মুখ চেপে ধরেন। এতে শ্বাসরোধ হয়ে সেখানেই মারা যায় নাছিম। পরে এনামুল ও ফিরোজ দুজনে মিলে নাছিমের মরদেহ নিয়ে গিয়ে বাড়ির ছাগল ও মুরগি রাখার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখেন। এ ঘটনার কয়েকদিন পর ওই দুইজন নাছিমের বাবার মোবাইলে মেসেজ করে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন।
আব্দুর রশিদ বলেন, বিষয়টি জানার পর পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত করে এনামুল ও ফিরোজকে আটক করে। আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্যে এনামুলের বাড়ির মুরগির ঘরে পুঁতে রাখা অবস্থায় নাছিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনের পর এ ঘটনায় অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি, হত্যা ও মরদেহ গুমের অপরাধে নাছিমের বাবা ওয়েজেল মণ্ডল বাদী হয়ে সারিয়াকান্দি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় এনামুল ও ফিরোজের নাম উল্লেখসহ আরও দুজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সারিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, এনামুল ও ফিরোজকে আদালতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তবে আবেদনের বিষয়টি পরে জানানো হবে। আসামিদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/আরএআর