নাটোরে পদ্মায় পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসব
গ্রামবাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যর অন্যতম হচ্ছে পলো দিয়ে মাছ ধরা। তবে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহ্যটি। গ্রামীণ এই ঐতিহ্যটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রতিবারের মতো এবারও পদ্মা নদীতে হয়ে গেল পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসব।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া এলাকায় পদ্মার বুকে জেগে থাকা (দামুস) নদীর হাঁটু পানিতে শতাধিক মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসব।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরই শীতের শেষের সময় পদ্মার বুকে জেগে থাকা (দামুস) নদীতে পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এবারও এই উৎসবের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা প্রস্তুত করেন বাঁশ ও জাল দিয়ে তৈরি ছোট বড় অসংখ্য পলো।
এবার মাছ ধরার উৎসবে অংশ নেন লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া, হাজিরহাট, চাঁদপুর, মোহরকয়া, মোমিনপুর এলাকার শৌখিন মাছ শিকারিরা। তাদের পলোর নিচে ধরা পড়ে টেংরা, পুঁটি, গজারসহ নানা জাতের দেশীয় মাছ। তাদের মাছ ধরা দেখতে আশেপাশের উৎসুক গ্রামবাসীও নদীর পাড়ে ভীর জমান।
মাছ ধরার উৎসবে অংশ নেওয়া মমিনপুর গ্রামের মিজু খান জানান, বংশ পরম্পরায় এভাবেই হয়ে আসছে মাছ ধরা উৎসব। শীতের শেষের দিকে উৎসবটি হয়ে থাকে। এবারে শীত একটু বেশি হওয়ায় মাছের পরিমাণ কম।
হাজিরহাট এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে প্রতি বছরে নদীর পানি কমে যায়। তখন আশপাশের গ্রামের মানুষরা একসঙ্গে মিলে পলো দিয়ে মাছ ধরি। অন্যবারের তুলনায় এ বছর মাছের পরিমাণ কম।
বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিদ্দিক আলী মিষ্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীতের সময় খাল-বিল, বাঁওড় পুকুরে পানি কমে গেলে দলে দলে লোক পলো নিয়ে মাছ ধরতে নামতেন। এখনো পলো দিয়ে মাছ ধরা আছে, তবে আগের মতো নয়। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পলো দিয়ে মাছ ধরা। তিনি বলেন, ঐতিহ্যটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও পদ্মা নদীতে হয় এই উৎসব। আমি আয়োজকদের সাধুবাদ জানাই। সেইসঙ্গে প্রতিবছর আয়োজনটি যাতে বড়-পরিসরে হয় সেই লক্ষ্য রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
গোলাম রাব্বানী/এএএ