বরই খাওয়াই কাল হলো দুই বোনের?
রাজশাহীতে অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুনতাহা মারিশা (২) ও মুফতাউল মাসিয়া (৫) নামে দুই বোন মারা গেছে। তাদের মৃত্যু নিপাহ ভাইরাসের কারণে হয়েছে কি না তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে দুই শিশুর মৃত্যুর কারণ হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে তাদের বরই খাওয়ার ঘটনাকে। শিশুদের মায়ের দাবি, কুড়িয়ে পাওয়া বরই খাওয়ার পরই তাদের শরীরে জ্বর আসে।
দুই মেয়ের মৃত্যুর পর তাদের বাবা মঞ্জুর হোসেন (৩৫) ও মা পলি খাতুনকে (৩০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঞ্জুর হোসেন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক। তিনি পরিবার নিয়ে ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারে থাকেন।
জানা গেছে, গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ছোট মেয়ে মারিশার জ্বর আসে। বিকেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মাইক্রোবাসে মারা যায় সে। ওই দিন রাতেই তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুর পর তার গায়ে কালো দাগ দেখা যায়। এর দুইদিন পর শুক্রবার বড় মেয়ে মাসিয়ার একই লক্ষণসহ জ্বর আসে। দ্রুত তাকে রাজশাহীর সিএমএইচে ভর্তি করেন মঞ্জুর হোসেন। পরের দিন শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সেও মারা যায়।
এরপর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দুই শিশুর বাবা-মাকে আর বাড়িতে যেতে দেননি। তাদের রামেক হাসপাতালে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের আইসোলেশনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্বজনরা মাসিয়ার মরদেহ গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় দাফন করেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দুই মেয়ে বরই খেয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। কী কারণে বা কোন ভাইরাসে তাদের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি এখনো জানা যায়নি। তাদের বাবা-মা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ফলাফল আজ বিকেল ৫টার পরে আসবে। তখন জানা যাবে কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
জয়নগর ইউনিয়নের মেম্বার আনোয়ার হোসেন বলেন, দুই শিশুকে তাদের গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় দাফন করা হয়েছে। সেখানে সবার মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শাহিনুল আশিক/এএএ