আত্মগোপনে থেকে অপহরণ নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেলেন শের আলী

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে দেড় বছর আত্মগোপনে ছিলেন। এ সময় দায়ের করা হয়েছে অপহরণ মামলা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে। নোয়াখালীতে এমন নাটক সাজানো যুবক শের আলীকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবি।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শের আলী নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, এক লাখ বিশ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন আত্মসাৎ করতে দীর্ঘ এক বছর সাত মাস আত্মগোপনে ছিলেন শের আলী। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তার পরিবারের লোকজনকে দিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনকে আসামি করে একটি গুম ও অপহরণ মামলাও দায়ের করিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, আত্মগোপনে থাকা শের আলী চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায় সিএনজি চালানোর সুবাদে পরিচয় হয় হাতিয়া বাজার এলাকার মোবারকের সঙ্গে। ২০২২ সালের ৫ জুলাই মোবারক একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই রাস্তার মাথার মৌলভি বাজার মোটরসাইকেল শো-রুমে যায়। এ সময় মোবারকের মোটরসাইকেল ক্রয়ের এক লাখ বিশ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল শের আলীর কাছে ছিল। মোটরসাইকেল ক্রয় করতে আইডি কার্ড ছবি লাগবে জানার পর টাকা ও মোবাইলটি শের আলীর কাছে রেখে বাসায় যায় মোবারক। এ সুযোগে টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গ্রামের বাড়ি কবিরহাটে চলে আসে শের আলী।
এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়, কিন্তু বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় অভিযুক্ত শের আলীকে ৭ জুলাই হাতিয়ার হরণি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই এলাকা থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় শের আলী। পরে আত্মগোপনে গিয়ে পরিবারের সহায়তায় ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে একটি গুম ও অপহরণ মামলা করান। ওই মামলায় মোবারকসহ আসামি করা হয় তাদের সঙ্গে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ থাকা শামছুল হক মাঝিসহ ৯ জনকে। পরবর্তী সময়ে মামলাটি কবিরহাট থানা অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর করে।
নোয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মগোপনে থাকা শের আলীর অবস্থান কক্সবাজার, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়। সর্বশেষ তিনি কক্সবাজার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে আছে নিশ্চিত হয়ে ওই এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারছা বাসের চালক হিসেবে এতদিন চাকরি করছিলেন বলে তিনি স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
হাসিব আল আমিন/এমএএস