কোনো কাজেই আসছে না দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার তরকারি বাজার সংলগ্ন খালের ওপর ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হয়েছে প্রায় ৮ মাস আগে। কিন্তু শেষ হলেও এই সেতুটি কোনো উপকারে আসছে না সাধারণ জনগণের। কেননা সেতুর উভয় পাশের সংযোগ সড়ক (অ্যাপ্রচ সড়ক) নির্মাণ না করায় সেতুটি ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পরে আছে। এতে প্রতিদিন হাজারও মানুষকে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে সেতু নির্মাণের পরও যাতায়াতে দুর্ভোগ কাটেনি এলাকাবাসীর।
সেতু নির্মাণ হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে বরং এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। সিঁড়ি বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে অনেক সময় শিশুরা ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বয়স্ক মানুষ কারো সাহায্য ছাড়া সেতুতে উঠতে পারছেন না। সেতুর দুই পাড়েই রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অফিস।
বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৌনে দুই কোটি টাকায় সেতু নির্মাণ করা হলেও এর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। ফলে কাঁচাবাজারে মালামাল নিয়ে অনেক দূরের পথ ঘুরে কষ্ট করে আসতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। খালটির উভয় পাশে রয়েছে পিচঢালা পাকা রাস্তা কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় ক্রেতারা বাজার করে রিকশা বা ভ্যানে চড়ে বাড়ি যেতে পারছেন না। চলাচলের যোগ্য পুরাতন সেতু ভেঙে ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের শুরু থেকে প্রায় দুই বছর ধরে এ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় ভুক্তভোগী শিক্ষক ছগির মৃধা বলেন, সেতুটির দক্ষিণ পাড়ে কাঁচাবাজারসহ উভয় পাড়ে স্থায়ী মার্কেট থাকায় এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে সেতুটি পারাপার হতে হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সবার চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
বাজারে আসা উপজেলা সদরের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, সেতু নির্মাণের দুই বছর পার হলেও এখনো তৈরি হয়নি সেতুর দুপাশে চলাচলের রাস্তা। এতে সেতুর সুবিধা পাচ্ছেন না দুইপারের কয়েক হাজার মানুষ।
ভ্যানচালক জমিরউদ্দীন বলেন, এ রাস্তা দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়া করতে খুবই কষ্ট হয়। এত টাকার সেতু এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে সেতুটির ঠিকাদার (ঝালকাঠি জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক) জিএস জাকির বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীর ডিজাইনের প্রয়োজন রয়েছে। ডিজাইন পেলেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়ক শীঘ্রই নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
আরকে